সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, চাঁদাবাজি এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ-৩ আসনের চারবারের সংসদ সদস্য জাহিদ মালেক, তার স্ত্রী শাবানা মালেক এবং ছেলে রাহাত মালেক শুভ্র মিলে একটি বিশাল প্রভাবশালী সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এই সিন্ডিকেটে তার ফুফাতো ভাইসহ একাধিক রাজনৈতিক নেতা ও আত্মীয়স্বজন জড়িত ছিলেন, যারা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন।
প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর, জাহিদ মালেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী হন এবং এরপর থেকেই তার পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার শুরু করে। স্ত্রী শাবানা মালেক মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে পরিবহন খাতে চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট পরিচালনা করেন। শুরুতে জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি বাবুল সরকারকে এই দায়িত্ব দেয়া হলেও পরে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলামকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, তার ছেলে রাহাত মালেক শুভ্র একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে এবং জেলা ছাত্রলীগের নেতাদের মাধ্যমে অবৈধ বালু ব্যবসা ও জমি দখলের কার্যক্রম পরিচালনা করে। এমনকি সরকারি হাসপাতালে নিয়োগেও তাদের হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে।
জাহিদ মালেকের নির্দেশে তার ফুফাতো ভাই এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ আত্মসাৎ করেছেন। তারা জমি দখল, চাঁদাবাজি এবং টেন্ডার বাণিজ্যের মাধ্যমে অঢেল সম্পদ গড়ে তুলেছেন।
জানা গেছে, মানিকগঞ্জের গড়পাড়া গ্রামে বিলাসবহুল বাড়ি, বাসস্ট্যান্ডে ১০তলা ভবন এবং ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাটসহ দেশ-বিদেশে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন জাহিদ মালেক ও তার পরিবার। ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য হওয়ার পর তার সম্পদ ১১ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়া, স্থানীয় জনগণের জমি নামমাত্র মূল্যে কিনে নেয়া এবং জমি দিতে অস্বীকৃতিদের মিথ্যা মামলায় হয়রানি করার অভিযোগও রয়েছে। অনেকেই জাহিদ মালেকের লোকজনের বিরুদ্ধে তাদের জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন।
মানিকগঞ্জের স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও জনগণ জাহিদ মালেক এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। সরকার পতনের আগে জাহিদ মালেক ও তার পরিবার সপরিবারে ব্যাংকক পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
