একজন সুস্থ নারীর প্রজননক্ষম বয়সে প্রতি মাসে নিয়মিত রক্তক্ষরণ ঘটে, যা মাসিকের স্বাভাবিক অংশ। এই সময়ের রক্তক্ষরণ একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ অবশ্যই দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে এবং এর পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে যার চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু কতটা রক্তক্ষরণ স্বাভাবিক, আর কতটা বেশি রক্ত গেলে তা অস্বাভাবিক হিসেবে গণ্য হবে?
অনেক নারী পিরিয়ড সম্পর্কে আলোচনা করতে সংকোচ বোধ করেন, এবং রক্তক্ষরণের স্বাভাবিক পরিমাণ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকার কারণে তাঁরা বুঝতে পারেন না যে তাদের রক্তক্ষরণ অস্বাভাবিক হচ্ছে কিনা। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে তারা অজান্তে কোনো রোগ বহন করতে পারেন, যা পরে জটিল আকার ধারণ করতে পারে। ডেঙ্গুজ্বরের মতো রোগের কারণে মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণও হতে পারে। সাধারণত, মাসিকের প্রথম দু-তিন দিন বা মাঝের কয়েকটি দিন রক্তক্ষরণ বেশি হওয়া স্বাভাবিক, তবে সেই ‘বেশি’ কেমন হলে তা স্বাভাবিক ধরা হবে, তা জানা গুরুত্বপূর্ণ।
কিছু উপসর্গ দেখে বোঝা যায় রক্তক্ষরণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হচ্ছে কিনা। এসব উপসর্গ থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক কারণ নির্ধারণ করা জরুরি। মনে রাখবেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ সব সময় জরায়ুর সমস্যার কারণে নাও হতে পারে; হরমোনের তারতম্য, রক্তের রোগসহ আরও বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে।
কখন বুঝবেন রক্তক্ষরণ বেশি হচ্ছে?
– যদি দুই ঘণ্টার আগেই স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ট্যাম্পুন পরিবর্তন করতে হয়
– একটানা কয়েক ঘণ্টা ধরে প্রতি ঘণ্টায় এক বা একাধিক ন্যাপকিন বা ট্যাম্পুন রক্তে ভিজে যায়
– রক্তক্ষরণের কারণে একই সঙ্গে দুটি স্তরের স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে হয়
– অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য দৈনন্দিন কাজ করতে বাধা সৃষ্টি হয় (শুধু ব্যথার জন্য নয়)
– রাতে ঘুমের মধ্যে উঠে ন্যাপকিন বা ট্যাম্পুন পরিবর্তন করতে হয়
– সাত দিনের বেশি সময় ধরে রক্তক্ষরণ হয় (যদিও রক্তের পরিমাণ কম হলেও)
– চাকা চাকা রক্ত গেলে
– মাসিকের সময় নিয়মিত পেটে ব্যথা হয়
– মাসিকের সময় অস্বাভাবিক ক্লান্তি বা দুর্বলতা অনুভব করলে