দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০৭:৩১

স্তন ক্যানসার: প্রাথমিক সতর্কতা ও সচেতনতার গুরুত্ব

**স্তন ক্যানসার: সচেতনতা ও প্রতিরোধের গুরুত্ব**

 

স্তন ক্যানসার নারীদের মধ্যে একটি সাধারণ তবে ঝুঁকিপূর্ণ রোগ। সঠিক সময়ে শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব। স্তন ক্যানসার সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানানো, নিয়মিত স্ব-পরীক্ষা করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

 

### স্তন ক্যানসারের লক্ষণ

 

স্তন ক্যানসারের কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে, যা আগে থেকে শনাক্ত করা গেলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যায়। লক্ষণগুলো হলো:

– স্তন বা বগলের কাছে শক্ত বা মসৃণ গাঁঠ দেখা দেওয়া।

– স্তনের আকার বা আকৃতিতে পরিবর্তন।

– স্তনের ত্বকে গর্ত বা ডিম্পল সৃষ্টি হওয়া।

– স্তনের ত্বক লালচে বা ফোলাভাব হওয়া।

– নিপল থেকে অস্বাভাবিক রস বের হওয়া বা নিপলের আকৃতিতে পরিবর্তন।

– বগলে বা ঘাড়ে ফুলে যাওয়া গ্রন্থি।

 

### স্তন স্ব-পরীক্ষা: কীভাবে করবেন?

 

প্রতি মাসে একবার স্তন স্ব-পরীক্ষা করা উচিত, যাতে প্রাথমিক অবস্থায় ক্যানসার শনাক্ত করা যায়। এটি আপনার মাসিক চক্র শেষ হওয়ার কয়েক দিন পর করা সবচেয়ে ভালো। যদি মাসিক চক্র নিয়মিত না থাকে, তবে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট দিন নির্বাচন করুন।

 

1. **আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পরীক্ষা করুন**: আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আপনার হাত কোমরে রাখুন। স্তনের আকার, আয়তন এবং ত্বকের রঙের পরিবর্তন লক্ষ্য করুন। এরপর হাত দুটি মাথার উপরে তুলুন এবং স্তনের দিকে দেখুন।

 

2. **হাত দিয়ে অনুভব করুন**: হাতের তালুর নিচের অংশ ব্যবহার করে স্তন পরীক্ষা করুন। ছোট ছোট বৃত্তাকার ঘূর্ণন করে স্তনের উপরের অংশ থেকে নিচের দিকে এবং বগল থেকে মধ্যভাগ পর্যন্ত পুরো স্তন অঞ্চলটি পরীক্ষা করুন। উভয় স্তন একইভাবে পরীক্ষা করুন।

 

3. **শোয়া অবস্থায় পরীক্ষা**: একটি বালিশের সাহায্যে ডান কাঁধ উঁচু করে ডান হাত মাথার নিচে রাখুন। বাম হাত দিয়ে ডান স্তন পরীক্ষা করুন। একইভাবে, বাম স্তনের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি ব্যবহার করুন।

 

### চিকিৎসকের পরামর্শ

 

কোনো অস্বাভাবিকতা লক্ষ করলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। স্তন ক্যানসার হলে অনেক সময় প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসায় সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। নিয়মিত ম্যামোগ্রাম এবং চিকিৎসকের পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি।

 

### স্তন ক্যানসার প্রতিরোধের উপায়

 

– স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা।

– ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকা।

– অতিরিক্ত ওজন এড়ানো।

– নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ ও চেকআপ করানো।

 

নিজেকে সুস্থ রাখার দায়িত্ব আপনার ওপর। সঠিক সময়ে সচেতনতা অবলম্বন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন মেনে চললে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। তাই নিয়মিত স্ব-পরীক্ষা করুন এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। আপনার সচেতনতাই আপনার সুস্থতার চাবিকাঠি!

 

**লেখক:** সিনিয়র কনসালটেন্ট ও কো-অর্ডিনেটর, মেডিকেল অনকোলজি, এভারকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট