কাজের ফাঁকে হালকা ক্ষুধা অনুভব করলে অনেকেই দ্রুত স্ন্যাকস হিসেবে এক-দুটি শিঙাড়া খেয়ে নেন। তবে, ‘হালকা স্ন্যাকস’ হিসেবে খাওয়া হলেও শিঙাড়া কিন্তু ক্যালোরির দিক থেকে মোটেও হালকা নয়। একটি শিঙাড়ায় ক্যালোরির পরিমাণ এক কাপ ভাতের সমান হতে পারে। অনেক দোকানে একই তেল দিয়ে বারবার ভাজার কারণে এর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। তাই সুস্বাদু হলেও শিঙাড়া খাওয়ার আগে চিন্তা করা উচিত।
এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানালেন ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী।
**ওজন বাড়ার কারণ**
প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য সুস্থ থাকার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যালরি প্রয়োজন, যা সারা দিনের খাবারে ভাগ করা হয়। যদি এই ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ বেশি হয়, তবে তা ওজন বাড়ানোর কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত ক্যালরি পোড়ানো কঠিন, তাই সারা দিনে নাশতার পাশাপাশি খাবারের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন খাবার যেমন শিঙাড়া, বেশি পরিমাণে খেলে ওজন বেড়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক।
**শিঙাড়ার উপাদান**
শিঙাড়ায় মূলত আলু ব্যবহার করা হয়, যা শর্করার উৎস। বাইরের খোলাও শর্করা দিয়ে তৈরি, ফলে এতে ক্যালোরির পরিমাণ অনেক বেশি। বড় একটি শিঙাড়ায় প্রায় 230-240 ক্যালরি থাকতে পারে, যা মাঝারি আকারের ভাতের সমান। মাঝে মাঝে স্ন্যাকস হিসেবে একটি শিঙাড়া খাওয়া ক্ষতিকর নয়, কিন্তু যদি একাধিক শিঙাড়া খান, তবে ক্ষতি বাড়তে পারে। এছাড়া শিঙাড়ার সঙ্গে সস বা কেচাপ গ্রহণ করলে ক্যালোরির পরিমাণ আরও বাড়ে।
**স্বাস্থ্যকর নাশতা**
সকালের মূল নাশতা বাদ দিয়ে খালি পেটে শিঙাড়া খাওয়াও স্বাস্থ্যকর নয়, কারণ এতে অ্যাসিডিটির ঝুঁকি বাড়ে। সুষম নাশতার জন্য যথেষ্ট আমিষসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন, যা আলুর শিঙাড়ায় পাওয়া যায় না।
**তেল ও লবণ**
শিঙাড়ায় প্রচুর লবণ যোগ করা হয়, যা রক্তচাপ বাড়ানোর ঝুঁকি সৃষ্টি করে। নিয়মিত শিঙাড়া খেলে রক্তে চর্বির পরিমাণও বাড়তে পারে, যা হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া, কোন তেলে শিঙাড়া ভাজা হচ্ছে, সে বিষয়েও খেয়াল রাখা জরুরি।
**অন্যান্য স্ন্যাকস**
শিঙাড়া ছাড়াও আরও অনেক খাবার, যেমন স্যান্ডউইচ, পুরি ও বার্গারও ‘হালকা’ হিসেবে পরিচিত। এসব খাবার থেকে ক্যালরির পরিমাণ শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই, মূল খাবার বাদ না দিয়ে সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করা এবং স্ন্যাকস হিসেবে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়া উচিত।