**নিউমোনিয়া: লক্ষণ, ঝুঁকি ও প্রতিরোধ**
### ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিরা
নিউমোনিয়া এমন একটি জটিল ফুসফুসের সংক্রমণ, যা সাধারণত ঠান্ডা লাগা বা সর্দির থেকে অনেক গুরুতর। বিশেষ করে, যাদের বয়স ৫০ বছর বা তার বেশি, ফুসফুস, হৃদরোগ, কিডনির সমস্যা, বা ডায়াবেটিস রয়েছে, এবং যারা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার দুর্বলতার সম্মুখীন, তাদের নিউমোনিয়া হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এছাড়া, মাদকাসক্ত ব্যক্তিরাও সহজে এই রোগের শিকার হন।
### নিউমোনিয়ার লক্ষণ
নিউমোনিয়ার প্রধান লক্ষণগুলো অন্তর্ভুক্ত:
– **জ্বর**: সাধারণত উচ্চ তাপমাত্রা, সাথে প্রচুর ঘাম।
– **কাশি**: কাশি হতে পারে শুকনো বা শ্লেষ্মা সহ, কখনও রক্তও দেখা যেতে পারে।
– **বুকে ব্যথা**: কাশির সময় বা গভীর শ্বাস নেওয়ার সময় ব্যথা বৃদ্ধি পায়; একে বলা হয় পেরিটিক চেস্ট পেইন।
– **ডায়রিয়া**: কিছু রোগী বিশেষ করে বৃদ্ধদের মধ্যে লুজ মোশনও দেখা যায়।
### নিউমোনিয়ার বিশেষ ধরনের রোগ
নিউমোনিয়ার আরেকটি বিশেষ ধরনের সংক্রমণ হচ্ছে **অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া**। এটি তখন ঘটে যখন খাবার বা পানীয় সঠিকভাবে গিলতে না পারার কারণে ফুসফুসে চলে যায় এবং সেখানে ইনফেকশন সৃষ্টি করে।
### ডায়াগনোসিসের প্রাথমিক ধাপ
নিউমোনিয়া শনাক্ত করতে প্রথমে **চেস্ট এক্স-রে** করা হয়। এক্স-রেতে প্যাচ দেখা গেলে নিউমোনিয়ার সম্ভাবনা থাকে। রোগটির তীব্রতা নির্ধারণের জন্য **CURB-65 স্কোর** ব্যবহার করা হয়, যেখানে রোগীর ইউরিয়া লেভেল এবং মেন্টাল ডিসঅরিয়েন্টেশনও দেখা হয়। যদি রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়, তবে হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজন।
### চিকিৎসা ও প্রতিক্রিয়া
নিউমোনিয়া চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের যথাযথ নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোগীর অবস্থা অনুযায়ী চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করেন, যা রোগীর আত্মীয়দের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। তবে, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ ক্ষমতা (রেজিস্ট্যান্স) থাকায় এই পরিবর্তন অপরিহার্য।
### প্রতিরোধ
নিউমোকক্কাল রোগ প্রতিরোধের জন্য কার্যকর টিকা রয়েছে। সর্দি, কাশি বা জ্বর হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
**লেখক:** বক্ষ্যব্যাধি বিশেষজ্ঞ, ইকবাল চেস্ট সেন্টার, মগবাজার ওয়্যারলেস, ঢাকা।