চিনি ছাড়া অনেকের জীবন কল্পনা করা কঠিন। তবে চিনি খেতে হলে কতটুকু খাওয়া উচিত? আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, নারীদের জন্য দিনে ৬ চা–চামচ এবং পুরুষদের জন্য ৯ চা–চামচ চিনি গ্রহণের অনুমতি আছে। এর মানে দিনে ২৫-৩৬ গ্রাম বা প্রায় ১০০-১৫০ ক্যালরি চিনি খাওয়া যেতে পারে। অপরদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সর্বোচ্চ ৫০ গ্রাম চিনি খাওয়ার পরামর্শ দেয়, তবে প্রতি দিন ২৫ গ্রাম ‘অ্যাডেড সুগার’ গ্রহণের সীমা রাখা উচিত। বেশিরভাগ সময়ই আমরা অবচেতনভাবে চিনি গ্রহণ করি, যা মিষ্টি, কেক, ফল, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়ের মাধ্যমে ঘটে। কিন্তু আমরা কি বেশি চিনি খাচ্ছি? জার্মান dermatologist ও পুষ্টিবিশেষজ্ঞ ডা. লিলা আহলেমান অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার লক্ষণগুলো তুলে ধরেছেন:
১. **বারবার খিদে লাগে ও ওজন বাড়ে:** চিনি প্রচুর ক্যালোরি দেয়, কিন্তু এতে ফাইবারের অভাব থাকে, যা স্থায়ীভাবে ক্ষুধা মেটাতে পারে না। ফলে ‘সুগার স্পাইক’ হয় এবং বারবার খিদে লাগে, যার ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়।
২. **ত্বকের স্বাস্থ্য খারাপ হয়:** চিনি খেলে ইনসুলিন ও গ্রোথ ফ্যাক্টর-১ (জিএফ-১) এর মাত্রা বাড়ে, যা ত্বকের গ্রন্থিগুলোকে উদ্দীপ্ত করে। এর ফলে ত্বকে সমস্যা যেমন ব্রণ দেখা দিতে পারে।
৩. **মুড সুইং ও বদমেজাজ:** রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গেলে ইনসুলিনের নিঃসরণও বাড়ে, যা কখনো কখনো হাইপোগ্লাইসেমিয়া সৃষ্টি করে। এতে ক্ষুধা বৃদ্ধি পায় এবং মুড সুইং ঘটে, যেমন হঠাৎ রাগ বা হতাশা।
৪. **রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়:** অতিরিক্ত চিনি ক্ষুদ্রান্ত্রের ধারণক্ষমতা ছাড়িয়ে গেলে বৃহদন্ত্রে শোষিত হয়, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে এবং বার্ধক্য ত্বরান্বিত করে।
৫. **দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া:** বেশি চিনি খেলে ‘অ্যাডভান্সড গ্লাইকেশন অ্যান্ড প্রোডাক্টস’ (এজিইএস) তৈরি হয়, যা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের ক্ষয়কে পুনরুদ্ধার করতে বাধা দেয়।
এই লক্ষণগুলো লক্ষ্য করে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার চিনি গ্রহণের পরিমাণ কতটা।