ডেঙ্গুর প্রকোপ আবারও বেড়েছে, যা প্রতি বছর এই সময়টাতে দেখা যায়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সাধারণত এ সময়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে এবার ডেঙ্গুকে একটু ভিন্নভাবে বিবেচনা করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক আহমেদ। তার মতে, বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্তদের বেশিরভাগই সেকেন্ডারি সংক্রমিত রোগী, অর্থাৎ যারা আগেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। দ্বিতীয়বারের সংক্রমণে উপসর্গগুলো কিছুটা ভিন্ন হয়, পাশাপাশি জটিলতা এবং মৃত্যুঝুঁকিও বেড়ে যায়।
এখন ডেঙ্গু জ্বর মূলত তিন ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমত, গ্রুপ-এ: যেখানে কোনো জটিলতা থাকে না। দ্বিতীয়ত, গ্রুপ-বি: যেখানে রোগীদের ‘ওয়ার্নিং সাইন’ বা বিপদ সংকেত থাকে এবং তাদের আগে থেকে হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, কিডনি বা লিভারজনিত দীর্ঘস্থায়ী রোগ থাকতে পারে, অথবা তারা উচ্চ ঝুঁকির রোগী হতে পারেন, যেমন স্থূল, গর্ভবতী, শিশু বা বয়স্ক। তৃতীয়ত, গ্রুপ-সি: এটি তীব্র জটিল রোগী যারা শ্বাসকষ্ট, রক্তচাপ কমে যাওয়া, তীব্র রক্তক্ষরণ, বা লিভার ফেইলিউর, ব্রেন এনকেফালাইটিস বা কিডনি বিকল হওয়ার মতো সমস্যায় ভুগতে পারেন।
**জটিলতা এড়াতে করণীয়:**
ডেঙ্গুর অ্যান্টিবডি তৈরি হতে সাত দিন সময় লাগে। প্রথম তিন-পাঁচ দিনের মধ্যে সিবিসি ও এনএসওয়ান অ্যান্টিজেন পরীক্ষা এবং সাত দিন পর ডেঙ্গু আইজি-এম ও আইজি-জি অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা উচিত। রোগীর নাড়ির গতি ও অন্যান্য শারীরিক পরীক্ষা এবং রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসক সিদ্ধান্ত নেবেন, চিকিৎসা বাড়িতে করা যাবে নাকি হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। এছাড়া, ‘টরনিকুয়েট টেস্ট’ নামের একটি পরীক্ষা আছে, যা প্রথম দিকে ডেঙ্গু শনাক্তে সহায়তা করতে পারে।
প্রত্যেক রোগীর চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকা উচিত। নিয়মিত রক্তচাপ মাপা এবং নির্দিষ্ট সময় পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো প্রয়োজন। ডেঙ্গু রোগীদের প্রচুর তরল খাবার খেতে হবে, বিশেষত লবণ ও পুষ্টি সমৃদ্ধ তরল, যেমন খাওয়ার স্যালাইন, ডাবের পানি, ফলের রস, শরবত ও ভাতের মাড়। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল সেবন করা যেতে পারে, তবে অ্যাসপিরিন বা ব্যথানাশক ওষুধ এড়িয়ে চলতে হবে।