৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব সিস্টিক ফাইব্রোসিস দিবস। এটি একটি প্রাণঘাতী জন্মগত রোগ যা জিনগত ত্রুটির কারণে ঘটে এবং ফুসফুস ছাড়াও অগ্ন্যাশয়, যকৃৎ, পরিপাকতন্ত্র ও প্রজননতন্ত্রের কার্যকারিতা ব্যাহত করে। ইউরোপীয় ও আমেরিকানদের মধ্যে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হলেও কয়েক দশক ধরে এশীয়দের মধ্যেও এটি শনাক্ত হচ্ছে।
**কারণ**
সিস্টিক ফাইব্রোসিস ‘সিস্টিক ফাইব্রোমিন ট্রান্সমেমব্রেন কন্ডাকটেন্স রেগুলেটর’ নামের জিনের ত্রুটির কারণে ঘটে। এটি এপিথেলিয়াম কোষের ক্লোরাইড চ্যানেলের কার্যকারিতা ব্যাহত করে, ফলে শ্লেষ্মায় জীবাণুর সংক্রমণ সহজে নিরাময় হয় না এবং ফুসফুসের সমস্যাগুলি বৃদ্ধি পায়। উত্তরাধিকারসূত্রে দুটি পরিবর্তিত সিএফটিআর জিন পেলে শিশুর সিস্টিক ফাইব্রোসিস হয়।
**লক্ষণ**
সাধারণত জন্মের প্রথম দুই বছরের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পায়, যেমন কালো মল, মলত্যাগে দেরি হওয়া, পেট ফুলে যাওয়া ও দীর্ঘমেয়াদি জন্ডিস। শিশু বারবার শ্বাসনালির প্রদাহ, ব্রঙ্কিওলাইটিস, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়, ওজন বাড়ে না এবং ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা দেখা দেয়।
** শনাক্তকরণ**
ঘাম পরীক্ষা করে ক্লোরাইডের মাত্রা নির্ণয় করা হয়; ৬০ এমএমওএল/এল পরিমাণ হলে সিস্টিক ফাইব্রোসিস সন্দেহ করা হয়। জেনেটিক পরীক্ষার মাধ্যমে জিনের ত্রুটি নিশ্চিত করা হয়।
**চিকিৎসা**
এই রোগের পূর্ণ নিরাময় নেই, তবে দ্রুত রোগ শনাক্তকরণ, উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক, নিয়মিত চেস্ট ফিজিওথেরাপি, ব্রঙ্কোডাইলেটর, স্টেরয়েড ইনহেলার, প্যানক্রিয়াটিক এনজাইম, ভিটামিন ও মিনারেল প্রতিস্থাপন এবং দীর্ঘমেয়াদি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের মাধ্যমে রোগী সুস্থভাবে দীর্ঘকাল বেঁচে থাকতে পারে। চিকিৎসার জন্য সারা জীবন ফলোআপ এবং নিয়মিত ওষুধ সেবন প্রয়োজন।
**সন্দেহ হলে**
মা-বাবার মধ্যে রক্তের সম্পর্ক থাকলে, একই উপসর্গে শিশুর ভাইবোনের মৃত্যু হলে, ওজন বাড়ছে না, পাতলা পায়খানা হলে, ঘন ঘন ফুসফুসের সংক্রমণ হলে শিশুকে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
অধ্যাপক ডা. এ আর এম লুৎফুল কবীর, শিশু বিশেষজ্ঞ, আদ্-দীন উইমেন্স মেডিকেল কলেজ, ঢাকা