পবিত্র রমজান প্রায় আসন্ন। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মুসলিমরা এ মাসে রোজা রাখবেন। তাঁদের অনেকেরই হয়তো ক্রনিক রোগবালাই আছে। অনেকে নিয়মিত নানা ওষুধ সেবন করেন। রমজান শুরুর আগেই তাঁদের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। অনেকেই রমজান শুরুর দু–এক দিন আগে এ বিষয়ে সচেতন হন। তখন কোনো শারীরিক সমস্যা বা অস্বাভাবিকতা ধরা পড়লে শোধরানোর সুযোগ থাকে না।
রুটিন চেকআপ ও চিকিৎসকের পরামর্শ
- যাঁদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, হাঁপানি, থাইরয়েডের সমস্যা বা অন্য কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগ আছে, তাঁরা অন্তত দুই সপ্তাহ আগে বা পারলে রমজান শুরুর আগেই চিকিৎসকের পরামর্শে একটি রুটিন চেকআপ সেরে ফেলুন।
- সাধারণত রুটিন চেকআপে রক্তের শর্করা, কিডনির অবস্থা বুঝতে ক্রিয়েটিনিন, প্রস্রাবে অ্যালবুমিন, লিভারের জন্য এসজিপিটি, রক্তের সিবিসি, ইলেকট্রোলাইট, লিপিড প্রোফাইল, ফুসফুসের রোগীদের প্রয়োজনে এক্স–রে, হৃদ্রোগীদের ক্ষেত্রে ইসিজি করা হয়ে থাকে।
- পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী আপনার নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন খানিকটা আগেই। কারণ, পুরোনো ওষুধের ডোজ পরিবর্তন বা কোনো নতুন ওষুধের সংযোজন দরকার হলে তা শরীরের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার যথেষ্ট সময় পাবেন এতে।
- ডায়াবেটিক রোগীরা রমজানে ইনসুলিনের বা ওষুধের মাত্রা কেমন হবে, লিখে নিন। রক্তচাপ ও অন্যান্য নিয়মিত ওষুধের রোজাকালীন সময়সূচিও জেনে নিন।
অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন
- চিকিৎসকের সঙ্গে আপনার বিগত বছরের অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন। এতে তাঁর বুঝতে সুবিধা হবে রমজানে আপনার কোন ধরনের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা আছে; যেমন ডায়াবেটিক রোগীদের বিগত বছরে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়েছিল কি না কিংবা উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের রক্তচাপে কোনো পরিবর্তন হয়েছিল কি না, হৃদ্রোগীদের শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়েছিল কি না ইত্যাদি। গতবারের সমস্যাগুলো এবার কীভাবে এড়ানো যায়, সেই পরামর্শ করুন।
- যাঁরা পরিপাকতন্ত্রের সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের রমজানে বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, জিইআরডিসহ নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কী করবেন, তা চিকিৎসকের কাছে জেনে নিন।
পুষ্টিবিদের পরামর্শ
- রমজানে আমাদের খাদ্যাভ্যাস অনেকটাই পাল্টে যায়। এতে কারও কারও নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার যাঁদের ক্রনিক রোগ আছে, তাঁদের নানা খাবারে নিষেধাজ্ঞা থাকে। রমজানে আমাদের ডাল বা বেসনের তৈরি অনেক খাবার গ্রহণ করা হয়, ভাজাপোড়া খাবারও খাওয়া হয় অনেক। কে কতটুকু খেতে পারবেন, তা নির্ভর করে তাঁর সাম্প্রতিক ক্রিয়েটিনিন, লিপিড প্রোফাইল বা শর্করার রিপোর্টের ওপর।
- যাঁদের আইবিএস, যকৃতের সমস্যা, পেপটিক আলসার, জিইআরডি, কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, তাঁরাও খাবার সম্পর্কে জেনে নিন কিসে ভালো থাকবেন। কিডনি ও হৃদ্রোগীদের অনেক সময় পানির পরিমাণ মেপে দেওয়া হয়। রাতে কতটুকু পানি বা তরল কীভাবে খাবেন, তা–ও জেনে নিন।
- এ বি এম আবদুল্লাহ, ইমেরিটাস অধ্যাপক, মেডিসিন