দ্যা নিউ ভিশন

এপ্রিল ২, ২০২৫ ০৭:৫১

চিনি খাওয়া কেন কমাবেন

মিষ্টি কারও কারও খুবই প্রিয়। সবকিছুতেই তাঁদের অতিরিক্ত চিনি লাগে। অনেকের চিনিযুক্ত কিছু না খাওয়া পর্যন্ত কিছুই ভালো লাগে না। অত্যধিক চিনি খাওয়ার ফলে এমন নির্ভরশীল আচরণ ও গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।

চিনি ডোপামিন নিঃসরণ, লোভের চক্র তৈরি এবং অতিরিক্ত খাওয়ার মাধ্যমে মস্তিষ্কের পুরস্কারব্যবস্থাকে সক্রিয় করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চিনির ওপর নির্ভরতা বাড়ে, বিপাকজনিত জটিলতাও বাড়ে। বলা হয়, সাদা চিনি বিষাক্ত। এটি যত কম খাওয়া যায়, ততই ভালো। এখানে চিনির বিষাক্ততার কিছু মূল দিক বলা যাক।

স্বাস্থ্য সমস্যা

● অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ, বিশেষ করে চিনিযুক্ত পানীয় ও প্রক্রিয়াজাত খাবার ওজন বৃদ্ধি ও স্থূলতার প্রধান কারণ।

● চিনির অতি ব্যবহার ইনসুলিন প্রতিরোধের দিকে বিপাকক্রিয়াকে চালিত করতে পারে, যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের একটি প্রধান কারণ।

● ফ্রুক্টোজ, সাদা চিনির একটি উপাদান (সুক্রোজ) ও উচ্চ ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ লিভারে বিপাক হয়। অতিরিক্ত চিনি বা শর্করা ট্রাইগ্লিসারাইড হিসেবে জমে ফ্যাটি লিভার করে।

● উচ্চ রক্তচাপ, প্রদাহ ও অস্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরলের মাত্রাসহ হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধির সঙ্গে অতিরিক্ত চিনি গ্রহণের সম্পর্ক রয়েছে।

● বাড়তি চিনি স্ট্রোকের ঝুঁকিতেও ভূমিকা রাখতে পারে।

● চিনি মুখগহ্বর ও দাঁতের ক্ষয়ের একটি প্রাথমিক কারণ। কেননা, এটি মুখের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার প্রিয় খাদ্য।

● অত্যধিক চিনি খাওয়া বিষণ্নতা ও উদ্বেগের ঝুঁকির সঙ্গে যুক্ত।

আসক্তি

চিনি মস্তিষ্কে ডোপামিনের নিঃসরণ বাড়াতে পারে, যা আসক্তির মতো আচরণ ও লোভের দিকে পরিচালিত করে। পরে এটির গ্রহণ কমানো কঠিন করে তোলে।

প্রদাহ ও রোগ প্রতিরোধ

দীর্ঘস্থায়ী উচ্চমাত্রায় চিনি গ্রহণ প্রদাহের সৃষ্টি করে, যা বাত, কিছু ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগের সঙ্গে যুক্ত। এটি রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকেও দুর্বল করে দিতে পারে, যা শরীরকে সংক্রমণের জন্য আরও সংবেদনশীল করে তোলে।

চিনির বিষক্রিয়া হ্রাস করবেন কীভাবে

● শর্করা সীমিত করুন: আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন নারীদের প্রতিদিন ৬ চা–চামচ (২৫ গ্রাম) ও পুরুষদের ৯ চা–চামচের (৩৮ গ্রাম) বেশি চিনি না খাওয়ার পরামর্শ দেয়।

● প্যাকেটের গায়ের লেবেল পড়ুন: প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন সস, আচার, রুটি ও মসলায় লুকানো শর্করা সম্পর্কে সচেতন হোন।

● গোটা খাবার বেছে নিন: ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য ও চর্বিহীন প্রোটিনের মতো সম্পূর্ণ, অপ্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে মনোযোগ দিন।

চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন: সোডা, এনার্জি ড্রিংকস, মিষ্টি চা, পানীয় ইত্যাদি ভেষজ চা বা মিষ্টি ছাড়া পানীয় দিয়ে প্রতিস্থাপন করুন।

ডা. শাহজাদা সেলিম, সহযোগী অধ্যাপক এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ছাত্রদলের অনুষ্ঠানে শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি, ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার আশা

ছাত্রশিবির, ছাত্রদলসহ যাঁরা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছেন, তাঁরা ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী