ব্যস্ত জীবনে ছুটি নেওয়া হয়ে ওঠে না। কাজের চাপ এতটাই যে মাঝে মাঝে মনে হয়, আর কিছুই সইছে না। কিন্তু অফিস কর্তৃপক্ষ এসব বুঝে না। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে উপস্থিত থাকতে হয়। শুধু শারীরিকভাবে অসুস্থ হলে কিছুটা ছুটি মিলতে পারে, কিন্তু সেটা আসলে ছুটি নয়। অসুস্থ হয়ে বাড়িতে থাকার বিষয়টা উপভোগ্য কিছুই নয়। তবে যদি এমন হতো যে আপনি অসুস্থ নন, বরং পুরোপুরি সুস্থ, তখনই যদি আজকের দিনটা ছুটির দিন হিসেবে পালিত হতো! ‘সিক লিভ’ এর বিপরীতে ‘ওয়েল লিভ’! বাড়িতে বসে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোটা হয়ে উঠত এক দারুণ উপভোগ্য দিন। কর্মজীবনের বাস্তবতায় এটা মনে হয় অমূলক, কিন্তু যদি এমন হতো তবে সত্যিই ভালো হতো। এমন এক ‘ছুটি’ যদি কর্মজীবনের অংশ হয়ে ওঠে, তবে তা কর্মের প্রতি উদ্যমকে আরও বাড়িয়ে দিত।
আসলে মাঝেমধ্যে খুব ক্লান্ত লাগে। সব কিছু ছেড়ে একেবারে হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে। তখন কিছু মানুষ ‘মিথ্যা অসুস্থতা’ দেখিয়ে ছুটি নিয়ে ফেলে। যারা স্বাধীন পেশায় আছেন, তাদেরও কি একই ধরনের চাপ থাকে? তারা তো বিরতি নিতে পারেন না। তাদেরও কখনো কখনো ‘কৃত্রিম অসুস্থতা’ বা অন্য কোনো অজুহাতের আশ্রয় নিতে হয়। এমনকি নিজের কাছে তারা যে অজুহাত দেয়, সেটা তাদের ব্যক্তিত্বে প্রভাব ফেলে। নিজের কাছে নিজের ছোট হয়ে যাওয়ার অনুভূতি তৈরি হয়। তবে যদি সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ‘সুস্থতাজনিত ছুটি’ চালু করত, তাহলে এমন অসততার কোনো প্রয়োজন থাকত না। বর্তমানে ‘শ্রান্তি বিনোদন ছুটি’ নামে সরকারি ছুটি থাকলেও তা তিন বছর অন্তর পাওয়া যায়। তবে সরকারি বা বেসরকারি যে কোনো প্রতিষ্ঠানে বছরে একদিন ‘ভালো থাকার কারণে’ ছুটি দেওয়া হলে, তা কর্মজীবনে এক নতুন মাত্রা যোগ করত।
আজ ৩০ নভেম্বর, ‘সুস্থ আছেন তাই বাড়িতে থাকুন’ দিবস। ওয়েলক্যাট নামক একটি প্রতিষ্ঠান এই দিবসটি চালু করেছে। প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা টমাস ও রুথ রয় দম্পতি দিনটি প্রচলন করেন। তাই আজকের দিনটি পালন করা যেতে পারে—মিথ্যা অসুস্থতার অজুহাত নয়, বরং ভালো আছেন বলেই আজকের দিনটা ছুটি নিয়ে বাড়িতে থাকুন।