দ্যা নিউ ভিশন

শিশুর ঠাণ্ডা-কাশি মোকাবিলার কিছু কার্যকর উপায়

### শীতে শিশুর ঠাণ্ডা-কাশি মোকাবিলার কার্যকর উপায়

 

শীতকালে শিশুর সর্দি, কাশি ও জ্বরের মতো সাধারণ অসুখগুলো বেশি দেখা যায়। এগুলোর বেশিরভাগই ভাইরাসজনিত এবং লক্ষণভিত্তিক কিছু চিকিৎসা আরামদায়ক হতে পারে। সতর্কতার সঙ্গে কিছু ঘরোয়া প্রতিকার ব্যবহার করে আপনি শিশুর ঠাণ্ডা-কাশি মোকাবিলা করতে পারেন।

 

#### লক্ষণ ও সতর্কতা:

ঠাণ্ডা-কাশি সাধারণত দুই-তিন দিন ধরে চলে, নাক বন্ধ থাকে, গলা ব্যথা ও খুসখুস করে, শুকনো কাশি থাকে এবং কখনও জ্বরও হতে পারে। এ সময় শিশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং ধুলাবালি ও ঠাণ্ডা থেকে দূরে রাখতে হবে। কাশি ছোঁয়াচে, তাই শিশুকে হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় রুমাল ব্যবহার করতে বলুন এবং বাইরে গেলে মুখে মাস্ক পরান।

 

#### করণীয়:

1. **নিয়মিত স্নান ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা:** শিশুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন, নিয়মিত স্নান করান এবং আরামদায়ক শীতের পোশাক পরান। টুপি, মোজা ও জুতা পরিয়ে রাখুন এবং খালি পায়ে মাটিতে হাঁটতে দেবেন না।

 

2. **খাবার ও পানীয়:** রেফ্রিজারেটরের ঠাণ্ডা খাবার ও আইসক্রিম না খাওয়ানো ভালো। খাওয়ার আগে ভালো করে হাত ধুয়ে দিন। ভিটামিন ‘সি’যুক্ত ফলমূল ও শাকসবজি বেশি করে খেতে দিন।

 

3. **বুকের দুধ ও অন্যান্য খাবার:** সাধারণ ঠাণ্ডা, সর্দি ও কাশিতে শিশুকে বেশি করে বুকের দুধ খাওয়ান। অন্যান্য খাবার অব্যাহত রাখুন। মধু, তুলসী পাতার রস, আদা চা, লেবুর শরবত বা চা, হালকা গরম পানি অল্প করে খাওয়ান।

 

4. **ঘরোয়া প্রতিকার:** হাত-পায়ে সরিষার তেল আর রসুন মালিশ করুন। নাক বন্ধ হলে নরমাল স্যালাইন (লবণ পানি) ব্যবহার করুন। লবণ-পানি গড়গড়া করতে বলুন। গরম পানিতে ম্যানথল মিশিয়ে নাক-মুখ দিয়ে টানুন। অক্সিমেটাজোলিন বা জাইলোমেটাজলিন নাকের ড্রপও ব্যবহার করতে পারেন।

 

5. **পর্যাপ্ত পানি পান:** ঠাণ্ডার সময় পানি খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়, এতে পানিশূন্যতা হয়ে গলা শুকিয়ে যায় এবং কাশি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই শিশুকে সারাদিন পর্যাপ্ত পানি পান করান।

 

6. **ডিমের সাদা অংশ, গাজর, চিকেন স্যুপ:** এই খাবারগুলো ঠাণ্ডায় ভালো কাজ করে। শিশুর নাক পরিষ্কার রাখুন, এতে শ্বাস নিতে সুবিধা হবে এবং খাওয়া বাড়বে।

 

#### বিপদচিহ্ন:

শিশু ক্রমেই বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন। নেতিয়ে পড়ছে, হাসছে না, খেলছে না, জ্বর আসছে কিনা, খেতে পারছে না, শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে বা বেশি ঘন শ্বাস নিচ্ছে, বুকে সাঁই সাঁই বা চিঁ চিঁ শব্দ হচ্ছে, কাশি দীর্ঘস্থায়ী কিনা (২ সপ্তাহ বা এর বেশি) – এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

 

#### সতর্কতা:

শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খাওয়াবেন না। কাশি হলেই কাশির ওষুধ দেবেন না। যে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যায় অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়াবেন, নিজের ইচ্ছামতো নয়।

 

লেখক: নবজাতক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ

সহযোগী অধ্যাপক, শিশু ও নবজাতক বিভাগ

বারডেম জেনারেল হাসপাতাল-২ (মহিলা ও শিশু হাসপাতাল), সেগুনবাগিচা, ঢাকা.

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ‘এটিভি ইউএসএ আইকনিক অ্যাওয়ার্ডে সেরা সঙ্গীত পরিচালক তানভীর তারেক

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত সঙ্গীত পরিচালক তানভীর তারেক নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত

কী লাগে এক জীবনে আর

পরীমনি, ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা, যদিও অভিনয়ে কম দেখা যায়,