প্রসবের পর পেট কমানোর প্রস্তুতি হিসেবে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত যোগব্যায়ামের চর্চা করা উচিত। গর্ভাবস্থায় শরীরচর্চা করলে নারীরা সন্তান প্রসবের পর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং গর্ভধারণের আগের ওজনে ফিরে যেতে সহজ হয়। যোগব্যায়াম প্রসব-পরবর্তী বিষণ্নতা বা পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এ সময় সব ধরনের ব্যায়াম করা সম্ভব নয়; শুরুতে হালকা ব্যায়ামের মাধ্যমে ফিটনেস ফিরে পেতে হবে।
প্রসবের সময় বিশেষ জটিলতা না হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ১০ থেকে ১৫ দিন পর থেকে হালকা যোগাসন শুরু করা যেতে পারে। যদি প্রসবের সময় লেসারেশন বা এপিসিওটমি হয়ে থাকে, তবে ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ বিশ্রামের পর যোগব্যায়াম শুরু করতে হবে। সিজারিয়ান বা গর্ভাবস্থার জটিলতার ক্ষেত্রে পেটের ৬টি স্তরের অপারেশনজনিত সুস্থতার ওপর নির্ভর করে ৯ থেকে ১০ সপ্তাহ পর হালকা এবং ১৪ থেকে ১৮ সপ্তাহ পর ভারী যোগব্যায়াম শুরু করা উচিত। এই বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
প্রসব-পরবর্তী যোগব্যায়ামের উপকারিতা:
– বিষণ্নতা এবং ওজন কমাতে সহায়তা করবে
– মুড সুইং কমাবে
– শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে
– শরীরের আকার ঠিক রাখবে
– আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করবে
– মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে
– ভালো ঘুম নিশ্চিত করবে
শিশুর জন্ম সিজারিয়ানের মাধ্যমে হোক বা স্বাভাবিকভাবে, মায়ের জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্বাভাবিক কাজকর্ম করার সময় ব্যায়াম বা প্রাণায়াম শুরু করা উচিত।
**ভুজঙ্গাসন**
**যেভাবে করবেন:**
ভুজঙ্গাসন সাপের ফনার মতো দেখতে বলে এর নাম ভুজঙ্গাসন। ইয়োগা ম্যাট বা পরিষ্কার জায়গায় উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুই পায়ের পাতা ও পা জোড়া লাগিয়ে রাখুন এবং দুই হাতের পাতা বুকের দুই পাশে রাখুন। হাত ও কনুই শরীরের সাথে লাগিয়ে রাখুন। থুতনি মাটিতে রেখে লম্বা করে শ্বাস নিন। শ্বাস নিতে নিতে মাথা, কাঁধ, বুক কোমর পর্যন্ত তুলুন। হাতের কনুই ভাঁজ করবেন না এবং কাঁধ ও বুক টান টান রাখুন। মাথা যতটা সম্ভব পেছন দিকে নিয়ে যান এবং চোখ খোলা রাখুন। এই অবস্থানে ১০ থেকে ৩০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন।
প্রথমদিকে পা জোড়া অবস্থায় আসনটি করতে না পারলে পা দুটো একটু ফাঁক করে অভ্যাস করতে পারেন। ধীরে ধীরে শরীর নমনীয় হলে সঠিক ভঙ্গিমায় আসনটি করতে পারবেন।
**উপকারিতা:**
এই আসন নিয়মিত করলে স্পন্ডিলাইটিস ও স্লিপ ডিস্কের মতো রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে। এটি স্ত্রীরোগ উপশমে ভালো কাজ করে, মেরুদণ্ডের হাড় নমনীয় রাখে, রক্তচলাচল ত্বরান্বিত করে এবং তরুণ্য অটুট রাখে। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্যও এটি উপকারী।
লেখক: এলিজা চৌধুরী, প্রশিক্ষক ও স্বত্বাধিকারী, এলিজা’স ইয়োগার্ট-ইয়োগা অ্যান্ড ওয়েলবিং সেন্টার