### মৃগীরোগের লক্ষণ ও করণীয়
মৃগীরোগ স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতাজনিত একটি রোগ, যা মস্তিষ্কের অতিসংবেদনশীলতার কারণে হয়। এ রোগের ফলে একজন মৃগীরোগীর মধ্যে এক বা একাধিক লক্ষণ দেখা যেতে পারে।
#### লক্ষণসমূহ:
1. **শরীর শক্ত হয়ে যাওয়া:** হঠাৎ করে শরীর শক্ত হয়ে পড়ে এবং অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
2. **অস্বাভাবিক আচরণ:** আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে, যেমন হঠাৎ ঢলে পড়া বা অস্বাভাবিক নড়াচড়া।
3. **খিঁচুনি:** শরীরের কোনো অংশে খিঁচুনি শুরু হয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
4. **অমনোযোগী হওয়া:** শিশুদের মধ্যে হঠাৎ করে কাজে অমনোযোগিতা দেখা দিতে পারে।
5. **অস্থিরতা:** হঠাৎ মাথা বা শরীর সামনে ঝুঁকে আসতে পারে।
6. **হাত থেকে জিনিস পড়ে যাওয়া:** হঠাৎ করে হাত থেকে কোনো জিনিস পড়ে যেতে পারে।
7. **অস্বাভাবিক নড়াচড়া:** হাত-পা ও মুখে অস্বাভাবিক নড়াচড়া দেখা দিতে পারে।
8. **ভিন্ন ধরনের অনুভূতি:** শরীরের কোনো অংশে ভিন্ন ধরনের অনুভূতি সৃষ্টি হতে পারে।
#### প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা:
1. মৃগীরোগ ঈশ্বরের দেওয়া অভিশাপ নয়, এটি স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতাজনিত একটি রোগ।
2. মৃগীরোগ মানসিক রোগ নয়, এটি শারীরিক কার্যক্রমের সমস্যা।
3. মৃগীরোগ সংক্রমিত হয় না এবং এটি কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না।
4. মৃগীরোগ সারাজীবনের জন্য অভিশাপ নয়, প্রায় ৬০ শতাংশ মৃগীরোগীর সাধারণত খিঁচুনি হয়।
#### করণীয়:
1. **শান্ত থাকা:** খিঁচুনি হলে রোগীকে শান্ত রাখতে হবে, শক্তি প্রয়োগ করা উচিত নয়।
2. **বাধা সরিয়ে ফেলা:** রোগীর কাছাকাছি থাকা শক্ত বস্তু সরিয়ে ফেলতে হবে।
3. **পাশ ফিরিয়ে শোয়ানো:** খিঁচুনি বন্ধ হলে রোগীকে পাশ ফিরিয়ে শোয়াতে হবে।
4. **শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ:** খিঁচুনি বন্ধ হলেও মুখ থেকে ফেনা বের হলে তা পরিষ্কার করতে হবে।
5. **নিরাপদ স্থানে নেওয়া:** রোগী রাস্তায় থাকলে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে হবে।
6. **সহানুভূতিশীল থাকা:** রোগীর প্রতি সহানুভূতিশীল থাকতে হবে এবং তার সঙ্গে থাকতে হবে যতক্ষণ না তিনি পুরোপুরি সুস্থ হন।
7. **পরিচয়পত্র রাখা:** রোগীর উচিত নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর সংবলিত পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখা।
8. **সাবধান থাকা:** পথ-ঘাটে চলতে সাবধান থাকা।
মৃগীরোগ একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ এবং নিয়মিত চিকিৎসা ও সচেতনতা মৃগীরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্থ জীবনযাপনে সহায়ক হতে পারে।