দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৪, ২০২৪ ২০:৪২

চক্ষুসেবা সম্প্রসারণে অরবিসের সঙ্গে কাজ করতে বাংলাদেশের আগ্রহ: ড. ইউনূস

দেশে চক্ষুসেবা সম্প্রসারণে অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস। তিনি বলেন, বাংলাদেশে চক্ষুসেবা সম্প্রসারণের প্রয়োজন রয়েছে এবং এ লক্ষ্যে অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে কাজ করতে তার দেশ প্রস্তুত।গত বুধবার বিকেলে অরবিস ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট ও সিইও ডেরেক হডকির সঙ্গে আলাপকালে ড. ইউনুস এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বর্তমানে চট্টগ্রামে অরবিস উড়ন্ত চক্ষু হাসপাতালের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসা ডেরেক ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন।

 

সাক্ষাতকালে ডেরেকের সঙ্গে ছিলেন অরবিস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. মুনির আহমেদ। অরবিসের প্রেসিডেন্ট ড. ইউনুসকে উড়ন্ত চক্ষু হাসপাতালের একটি মডেল উপহার দেন, যা প্রশংসিত হয়।

 

ডেরেক অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কাজ সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। তিনি জানান, অরবিস ১৯৮২ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি-সুরক্ষা কর্মসূচি চালিয়ে আসছে।

 

বাংলাদেশে অরবিস ৩৯ বছর ধরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছে, উল্লেখ করে ডেরেক বলেন, অরবিস এ সময়ের মধ্যে ৭৮ লাখেরও বেশি চক্ষু পরীক্ষা, সাড়ে ৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুর চিকিৎসা, ২ লাখ ৫৮ হাজারেরও বেশি চোখের সার্জারি এবং ৪০ হাজারেরও বেশি চক্ষুসেবা পেশাজীবীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

 

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে চক্ষুস্বাস্থ্য খাতে অরবিসের অবদান স্বীকার করেন এবং উড়ন্ত চক্ষু হাসপাতালের সেবার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, যেটি বর্তমানে বাংলাদেশে ১১তম প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

 

অরবিসকে বাংলাদেশের চক্ষুস্বাস্থ্য খাতের অন্যতম অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি অরবিসকে ভালোবাসি। আমি ফ্লাইং আই হসপিটালকে ভালোবাসি।’

 

ডেরেক বলেন, ব্যক্তি, পরিবার ও কমিউনিটির উন্নতিতে সাহায্য করতে অরবিস বিশ্বব্যাপী দুই শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে দৃষ্টি সুরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

 

বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০০ কোটি মানুষ সম্পূর্ণ পরিহারযোগ্য অন্ধত্ব ও দৃষ্টি সমস্যায় ভুগছে উল্লেখ করে ডেরেক বলেন, চার দশকেরও বেশি সময় ধরে অরবিস একটি শক্তিশালী ও টেকসই চক্ষুসেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। তিনি আরও জানান, অরবিস আফ্রিকা, এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকায় দেশভিত্তিক কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং উদ্ভাবনী প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি প্রয়োগ করছে।

 

শিশুর চোখের যত্ন, মাইক্রোসার্জারি, রেটিনাল সার্জারি, কর্নিয়ার রোগ, রেটিনোপ্যাথি অব প্রিম্যাচুরিটি এবং ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে অরবিস গত চার দশক ধরে বাংলাদেশে স্থানীয় অংশীদারদের দক্ষতা ও জ্ঞান বৃদ্ধি করতে কাজ করেছে।

 

প্রধান উপদেষ্টাকে ডেরেক জানান, বাংলাদেশে অরবিস ৪২টি ভিশন সেন্টার স্থাপন করেছে, যেগুলো সারাদেশের বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলের মানুষদের চক্ষুসেবার সঙ্গে যুক্ত করেছে। এছাড়া ১৭টি মাধ্যমিক হাসপাতাল, চারটি সর্বোচ্চ স্তরের হাসপাতাল, দুটি ওয়েট ল্যাব, একটি কোয়ালিটি রিসোর্স সেন্টার এবং একটি ডিজিটাল ট্রেনিং হাব স্থাপনে সহায়তা করেছে এ প্রতিষ্ঠান।

 

পাশাপাশি অরবিস ৪০০টি কমিউনিটি ক্লিনিককে চক্ষু পরীক্ষার যন্ত্রপাতি দিয়েছে এবং শিশু অন্ধত্বের প্রধান কারণ রেটিনোপ্যাথি অব প্রিম্যাচুরিটির পরীক্ষা ও ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নির্দেশিকা তৈরি করেছে।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ