কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা, শামস রুমি, সবসময় হাসিখুশি ও আনন্দে থাকেন। তার শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে ছিল অগাধ আত্মবিশ্বাস। অফিসের বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় হঠাৎই ধরা পড়ল তার কিডনির ক্যানসার। একটি কিডনি বাদ দিয়ে আপাতত তিনি স্বাভাবিক আছেন। চিকিৎসকরা বলেছেন, আর কিছুদিন পরে ধরা পড়লে বড় ধরনের বিপদ ঘটতে পারত!মূলত কিডনি ক্যানসার বলতে বোঝায়, কিডনি কোষের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সাধারণত রেনাল সেল কার্সিনোমা নামে এক ধরনের ক্যানসার দেখা যায়, যা রেনাল টিউবিউলে সৃষ্টি হয়। সার্জারির মাধ্যমে এই রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। রেডিয়েশন থেরাপি ও কেমোথেরাপির মাধ্যমে রেনাল সেল কার্সিনোমার চিকিৎসা সম্ভব নয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে ইমিউনো থেরাপি কাজ করতে পারে।
কিডনির ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে কিছু বিষয়, যেমন পরিবারের ইতিহাস, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, ও ডায়ালিসিসযুক্ত চিকিৎসা। শিশুরা সাধারণত উইলমা টিউমার নামক এক ধরনের কিডনি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়। রেনাল সেল কার্সিনোমার কারণ স্পষ্ট নয়, তবে কিছু কিডনি কোষের ডিএনএ-তে রূপান্তর ঘটলে ক্যানসার হতে পারে। এ মিউটেশন কোষগুলো দ্রুত বৃদ্ধি ও বিভক্ত হওয়ার সংকেত প্রদান করে, যা টিউমার তৈরি করে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
কিডনি ক্যানসারের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে কিডনি ফুলে যাওয়া, প্রস্রাব আটকে যাওয়া, প্রস্রাবে রক্ত যাওয়া, প্রস্টেটের সমস্যা, রাতে অতিরিক্ত প্রস্রাব আসা, বারবার প্রস্রাব আসা, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, গলা দিয়ে তরল পদার্থ নির্গত হওয়া, কুঁচকি ফুলে যাওয়া, মলের পরিবর্তন, বিছানায় প্রস্রাব করা ইত্যাদি। এ রোগের চিকিৎসায় ওষুধের পাশাপাশি কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হয় এবং প্রয়োজনে অপারেশন করা হয়।
কিডনি ক্যানসারের ঝুঁকির বিষয়গুলো হলো বয়স বাড়লে, ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, উচ্চ রক্তচাপ, দীর্ঘদিন ধরে ডায়ালিসিস গ্রহণ এবং পরিবারের ক্যানসারের ইতিহাস। তাই ক্যানসারের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে শুরুতেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি এবং উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করে সুস্থ থাকা প্রয়োজন।
**লেখক**: ব্রেস্ট, খাদ্যনালি ও কলোরেক্টাল ক্যানসার বিশেষজ্ঞ সার্জন, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগ, এনআইসিআরএইচ।
**চেম্বার**: ডেল্টা হাসপাতাল লি., ২৬/২ দারুস সালাম রোড, মিরপুর-১, ঢাকা।
ফোন: ০১৬১১৪৪৩৩৪৫; ০১৩০১২৫৪৯২৪
