দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৪, ২০২৪ ২৩:২০

গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু: কতটা ভয়ের এবং করণীয়

**গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু: ঝুঁকি ও প্রতিকার**

 

গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। এ সময় মায়েদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যায়। পাশাপাশি, হরমোনজনিত পরিবর্তনের ফলে দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও রক্তনালিতে এমন পরিবেশ তৈরি হয়, যা ডেঙ্গুর মতো ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। অনেক সময় গর্ভাবস্থায় মায়ের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো না থাকায় সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।

 

### **ডেঙ্গুর কারণে গর্ভাবস্থার জটিলতা**

1. **গর্ভপাতের আশঙ্কা:** ডেঙ্গু সংক্রমণ গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।

2. **প্রিম্যাচিউর বার্থ:** শিশুর নির্ধারিত সময়ের আগেই জন্ম হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

3. **জন্মগত সমস্যা:** কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ডেঙ্গু সংক্রমণ গর্ভস্থ শিশুর জন্মগত ত্রুটি বাড়াতে পারে।

4. **জন্মপরবর্তী ঝুঁকি:** শিশুর রক্ত বা সংক্রমণজনিত জটিলতা দেখা দিতে পারে।

 

### **গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গুর লক্ষণ**

– উচ্চমাত্রায় জ্বর

– শরীরে ব্যথা

– ত্বকে র‍্যাশ

– ক্লান্তি বা দুর্বলতা

 

এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

 

### **ঝুঁকি ও মৃত্যু কারণ**

গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গুর কিছু মারাত্মক প্রভাব রয়েছে, যা মায়ের মৃত্যুর কারণ হতে পারে:

1. **অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যকারিতা কমে যাওয়া:** উচ্চমাত্রার জ্বরের ফলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যকারিতা ব্যাহত হতে পারে।

2. **ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার:** এটি রক্তপাত বাড়ায় এবং প্রাণঘাতী হতে পারে।

3. **প্লাটিলেটের ঘাটতি:** প্লাটিলেট সংখ্যা হ্রাসের কারণে রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা কমে যায়, যা গুরুতর রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।

4. **প্রি-একলাম্পসিয়া বা একলাম্পসিয়া:** ডেঙ্গু এই জটিল অবস্থার কারণ হতে পারে, যা মায়ের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে।

5. **চিকিৎসার অভাব:** সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না পেলে মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

 

### **পরীক্ষা ও নিরীক্ষা**

ডেঙ্গু শনাক্ত করতে প্রয়োজনীয় কিছু পরীক্ষা:

– **ডেঙ্গু অ্যান্টিজেন টেস্ট:** সংক্রমণের প্রথম দুই দিনের মধ্যে করা উচিত।

– **অ্যান্টিবডি টেস্ট:** IgM ও IgG অ্যান্টিবডির উপস্থিতি চিহ্নিত করে।

– **প্লাটিলেট কাউন্ট:** প্লাটিলেটের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা হয়।

– **রক্তের অন্যান্য পরীক্ষা:** হিমোগ্লোবিন ও হেমাটোক্রিটের স্তর দেখা।

– **আলট্রাসনোগ্রাফি:** গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্য ও পরিস্থিতি মূল্যায়ন।

 

### **প্রতিরোধ ও করণীয়**

1. **মশার বিস্তার রোধ:** মশারি ব্যবহার, সুরক্ষিত পোশাক পরা এবং মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা।

2. **পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা:** ঘর ও আশপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা।

3. **চিকিৎসকের পরামর্শ:** ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা।

4. **হাসপাতালে ভর্তি:** গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু গুরুতর হলে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

 

গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু মোকাবিলায় দ্রুত শনাক্তকরণ, সঠিক চিকিৎসা এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো সতর্ক হলে মা ও সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ