এশিয়ার মধ্যে স্তন ক্যান্সারের হার সর্বোচ্চ পাকিস্তানে, যেখানে প্রতি নয়জন নারীর মধ্যে একজন জীবনে এই রোগের ঝুঁকিতে থাকে। ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন ২৩ লাখ নারী, যার মধ্যে প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজারের মৃত্যু হয়। পাকিস্তানের মারুফ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালের মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডা. মীর ওয়াহিদ এই তথ্য জানিয়েছেন, শনিবার হাসপাতালের স্তন ক্যান্সার সচেতনতা কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠানে।
ডা. ওয়াহিদ বলেন, “সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে জীবন বাঁচানোই সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হওয়া উচিত। সঠিক চিকিৎসা পেলে, স্থানীয় বা আঞ্চলিক স্তন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীরা ২০ বছরের বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারেন।”
মারুফ হাসপাতালের স্তন ক্যান্সার সার্জন ডা. সাইরা মাহমুদ ক্যান্সারের বৈশ্বিক প্রভাব তুলে ধরে বলেন, “২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩ লাখ ১০ হাজার ৭২০ নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সচেতনতা কর্মসূচিতে নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষাদান করা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, জীবনযাপনের অভ্যাস যেমন স্থূলতা, ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্রহণ ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তিনি নারীদের নিয়মিত স্তন পরীক্ষা করতে উৎসাহিত করেন, যাতে কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন দ্রুত শনাক্ত করা যায়।
রেডিওলজি বিভাগের প্রধান ডা. আয়েশা আমিন বলেন, “প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার শনাক্ত হলে এটি সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। আমরা আমাদের সেশনের মাধ্যমে মেমোগ্রাফি প্রোগ্রামগুলোকে সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করে তুলেছি, যাতে আরও বেশি নারী সচেতন হয়ে নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পদক্ষেপ নিতে পারেন।”
হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হারুন নাসির জানান, তাদের তিন মাসব্যাপী সচেতনতা কর্মসূচি বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠী, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং প্রান্তিক জনগণের মধ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে, যার ফলে ক্যান্সারের লক্ষণ, প্রাথমিক শনাক্তকরণ এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি অক্টোবরে সাধারণ সচেতনতা মাসের সীমা অতিক্রম করে নভেম্বর পর্যন্ত চলে, যেখানে অসচ্ছল জনগণের মধ্যে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।