**অপটিক নিউরোপ্যাথি: কীভাবে ঘটে এবং কী করণীয়**
অপটিক নিউরোপ্যাথি হলো অপটিক নার্ভের একধরনের প্রদাহ, যা চোখের সঙ্গে মস্তিষ্কের একমাত্র স্নায়ু সংযোগকে প্রভাবিত করে। এই নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হলে দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে।
### **অপটিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণ**
#### **১. ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া**
কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অপটিক নার্ভে প্রভাব ফেলতে পারে। এ ধরনের সমস্যাকে টক্সিক অপটিক নিউরোপ্যাথি বলা হয়।
– **যক্ষ্মার ওষুধ:**
– **ইথামবিউটল**: যক্ষ্মার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইথামবিউটল উচ্চ ডোজে (প্রতিদিন ৩৫ মিলিগ্রাম, তিন থেকে ছয় মাসের জন্য) অপটিক নার্ভে ক্ষতি করতে পারে।
– **আইসোনায়াজাইড (আইএনএইচ):** বিশেষত ইথামবিউটলের সঙ্গে ব্যবহারে অপটিক নিউরোপ্যাথির ঝুঁকি বাড়ে।
– **এপিলেপ্সি ওষুধ:**
– **ভিগাবাট্রিন:** প্রতিদিন ৩ গ্রাম ডোজে ব্যবহারের ফলে অপটিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
– **অ্যান্টিক্যানসার ওষুধ:**
– **মিথোট্রেক্সেড**: ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি তৈরি করলে অপটিক নিউরোপ্যাথি দেখা দিতে পারে।
#### **২. অন্যান্য কারণ**
– **অপটিক নিউরাইটিস:** ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাসের সংক্রমণ এবং অটোইমিউন ডিজিজের কারণে অপটিক নার্ভে প্রদাহ হতে পারে।
– **শারীরিক অসুস্থতা:**
– ডায়াবেটিস
– উচ্চ রক্তচাপ
– টেম্পোরাল আর্টারাইটিস
– মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস
– **বাহ্যিক কারণ:** মেথিলেটেড স্পিরিট সেবন, আঘাত, টিউমার বা জন্মগত ত্রুটি।
### **লক্ষণ**
– হঠাৎ এক বা দুই চোখে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া।
– রঙ চেনার সমস্যা বা কালার ভিশনে পরিবর্তন।
– মেথিলেটেড স্পিরিটজনিত ক্ষেত্রে পেটব্যথা, বমি, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও বিভ্রান্তি।
এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা না করালে স্থায়ী অন্ধত্বের ঝুঁকি থাকে।
### **চিকিৎসা**
– **প্রাথমিক চিকিৎসা:** বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগ কয়েক সপ্তাহে উপশম হয়।
– **ওষুধ:**
– স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ
– ভিটামিন বি-১২, বি-৬, ও বি-১
– **পরামর্শ:**
– যেকোনো ওষুধ সেবনের সময় চোখে উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
– দৃষ্টিশক্তি হঠাৎ কমে গেলে, অন্য উপসর্গ থাকুক বা না থাকুক, দেরি না করে চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
**পরামর্শ দিয়েছেন:**
অধ্যাপক ডা. সৈয়দ এ কে আজাদ
চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন
বিভাগীয় প্রধান, চক্ষুরোগ বিভাগ
আল-রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা