শিশু জন্মের পর নতুন মায়েদের দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না। অনেকেই ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না, কখন কী করবেন। এই দুশ্চিন্তার মধ্যে একটি বড় প্রশ্ন হলো, নবজাতকের চুল বা নখ কত দিন বয়সে ফেলা উচিত। অনেকের ধারণা, শিশুর জন্মের পরপরই তার চুল ফেলে দেওয়া উচিত, কারণ মায়ের গর্ভে থাকাকালে চুলে লেগে থাকা আঠালো পদার্থ অপবিত্র। তবে এটি সঠিক নয়। এই আঠালো পদার্থ নবজাতককে ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে এবং শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ফলে চুল কাটার জন্য তাড়াহুড়োর প্রয়োজন নেই।
জন্মের পরপরই চুল ফেলে দিলে নবজাতকের ত্বকে আঘাত লাগতে পারে বা ঠান্ডা লেগে **হাইপোথার্মিয়ার** ঝুঁকি বাড়তে পারে। বিশেষ করে শিশুর মাথার তালু এক থেকে দেড় বছর বয়স পর্যন্ত নরম থাকে। তাই, জন্মের ১০-১৫ দিন পরে বা তিন মাসের মধ্যে শিশুর চুল ছোট করে কাটা যেতে পারে। তবে এক বছর পর্যন্ত চুল কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নেই। চুল কাটার সময় অবশ্যই জীবাণুমুক্ত সরঞ্জাম ব্যবহার করা উচিত এবং কাজটি অভিজ্ঞ কারও দিয়ে করানো ভালো।
একটি প্রচলিত ধারণা হলো, বারবার চুল কাটলে চুল ঘন হয়। তবে বাস্তবে এটি শিশুর চুলের গঠন এবং ফলিকলের ওপর নির্ভর করে। শিশুর পুষ্টি ও চুলের সঠিক যত্নই এর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পারে।
নবজাতকের নখের ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি, কারণ নখ খুব দ্রুত বাড়ে এবং এতে জীবাণু জমতে পারে। এটি শিশুর ত্বকে আঁচড় বা সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
– **হাতের নখ:** সপ্তাহে একবার বা প্রয়োজন মতো কাটা উচিত।
– **পায়ের নখ:** মাসে একবার কাটা যেতে পারে।
নখ কাটার সঠিক সময় হলো, যখন শিশু ঘুমিয়ে থাকে। এর জন্য শিশুদের বিশেষ নেইল ক্লিপার ব্যবহার করা উচিত। আলো ভালোভাবে নিশ্চিত করে নখ কাটুন এবং শুধু নখের সাদা অংশটি কেটে দিন।
এছাড়া, নখ কাটার আগে আঙুল হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে নিলে কাজটি সহজ হবে। শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নখ কাটার সময় ধৈর্য ধরে সাবধানতার সঙ্গে কাজ করুন।
**ডা. ফারাহ দোলা**
বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর