গর্ভাবস্থায় মলত্যাগের প্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবেই বাধাগ্রস্ত হয়, যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সাধারণত দেখা দেয়। তবে এই সমস্যার সমাধান কি হতে পারে?
### কেন গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য হয়?
গর্ভকালীন কোষ্ঠকাঠিন্যের অন্যতম কারণ হলো হরমোনের পরিবর্তন, বিশেষ করে প্রজেস্টেরনের উচ্চমাত্রা, যা অন্ত্রের পেশি শিথিল করে দেয় এবং হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে ফেলে। এই সময় খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন, শরীরের গঠনের পরিবর্তন এবং নিয়মিত আয়রন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণও কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে। এর পাশাপাশি জরায়ুর বৃদ্ধি এবং তার ফলে বৃহদন্ত্রে চাপ তৈরি হওয়ায় মলত্যাগের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়।
### কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কী হয়?
কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রধান উপসর্গগুলো হলো— পেটে অস্বস্তি, পেট ফুলে যাওয়ার অনুভূতি, ক্ষুধামান্দ্য, শক্ত মলত্যাগ ইত্যাদি। দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য পাইলস বা মলদ্বারে রক্তক্ষরণের কারণও হতে পারে।
### প্রতিরোধের উপায়:
১. **আঁশযুক্ত খাবার খান**
সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, এবং ফাইবারযুক্ত খাবার (যেমন শস্যাদি) কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়ক। এছাড়া, রাতে এক গ্লাস দুধ বা এক বাটি টক দই খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং মলত্যাগ সহজ হয়।
২. **যথাযথ পরিমাণে পানি পান করুন**
দিনে ৩-৪ লিটার পানি পান করা উচিত। সঠিকভাবে পানি পান করার জন্য বসে পান করুন, যাতে শরীরের সব অঙ্গে তা পৌঁছাতে পারে এবং কার্যকরীভাবে কাজ করতে পারে।
৩. **হালকা ব্যায়াম করুন**
সপ্তাহে ৪-৫ দিন ২০-৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি বা যোগব্যায়াম করুন (চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী)।
৪. **মলত্যাগের অভ্যাস গড়ে তুলুন**
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে মলত্যাগের চেষ্টা করুন, যাতে কোষ্ঠকাঠিন্য এড়ানো যায়।
### যদি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর না হয়:
যদি উপরের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করেও গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর না হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মল নরমকারী ওষুধ গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে ওষুধের পরিমাণ এবং ধরন নির্ধারণ করবেন শুধুমাত্র চিকিৎসক।
লেখক: ডা. সুমাইয়া বি. জাহান, রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার
গাইনি ও প্রসূতি বিভাগ
স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড