দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০২:২৮

গলায় কাঁটা আটকালে কী কী কাজ করা উচিত নয়?

মাছ খেতে গিয়ে গলায় কাঁটা আটকে যাওয়ার অভিজ্ঞতা প্রায় সবারই হয়ে থাকে। মাছে–ভাতে বাঙালি, আর গলায় কাঁটা আটকে গেলে কী করবেন, তা নিয়ে অনেকেরই চিন্তা হয়। সাধারণত বড় বা মাঝারি মাছের কাঁটা গলার মধ্যে, জিবের গোড়া অথবা গলবিলে (ফ্যারিংস) আটকে যায়। কাঁটার আকার সাধারণত আধা সেন্টিমিটার থেকে তিন সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে, তবে ছোট কাঁটা আটকে যাওয়ার হার বেশি। রুই, ভেটকি, ইলিশ, তেলাপিয়া, পুঁটি, টাকি, গুলশা—এ ধরনের মাছেই এই কাঁটা বেশি থাকে।

 

**কত দিন পর্যন্ত আটকে থাকতে পারে?**

এখন পর্যন্ত এমন একটি ঘটনা জানা গেছে যেখানে গলায় কাঁটা আটকে ছিল ৯ মাস, এবং দীর্ঘ সময় পর ঘাড়ে ব্যথা শুরু হলে চিকিৎসা নিতে গিয়ে প্রথম কাঁটা খুঁজে পাওয়া যায়।

 

**কাদের বেশি আটকায়?**

মাছের কাঁটা ছোট-বড়, ছেলে-মেয়ে, বয়স্ক—সব বয়সী মানুষের গলায় আটকে যেতে পারে। তবে, ২১-৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়, কারণ তারা ব্যস্ততার কারণে দ্রুত খাবার খেতে গিয়ে অমনোযোগী হন। এছাড়া নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি ঝুঁকি থাকে:

– শিশু

– বয়স্ক

– নকল দাঁত ব্যবহারকারীরা

– সেরেব্রাল পালসি রোগী

– মাসকুলার ডিস্ট্রফি রোগী

– যারা দ্রুত ও বেশি পরিমাণ খাবার খান

 

**গলায় কাঁটা আটকে গেলে কী করবেন?**

১. **সাদা ভাত গিলুন**: এটি মাছের কাঁটা নামানোর সবচেয়ে প্রচলিত পদ্ধতি। সাধারণত দু–তিনবার গিললে কাঁটা চলে যায়।

২. **পাকা কলা খান**: পাকা কলা গলা থেকে কাঁটা নামানোর জন্য ভালো।

৩. **জোরে কাশি দিন**: জিবের পেছনে কাঁটা আটকে থাকলে জোরে কাশি দিলে তা বের হয়ে আসে।

৪. **অলিভ অয়েল খান**: অলিভ অয়েল গলার ভেতরকে পিচ্ছিল করে কাঁটা নামাতে সাহায্য করে।

৫. **ভিনেগার বা লেবু খান**: এগুলোর অ্যাসিডিক প্রকৃতি কাঁটাকে নরম করে গলা থেকে নামিয়ে দেয়।

৬. **লবণপানির গড়গড়া করুন**: কুসুম গরম লবণ পানি গড়গড়া করলে গলার মাংসপেশি আলগা হয়ে কাঁটাকে মুক্ত করতে সাহায্য করে।

৭. **ক্র্যাকার্স বা চিপস খান**: কিছু সময় একসঙ্গে চিপস বা ক্র্যাকার্স খাওয়ার মাধ্যমে কাঁটা নেমে যেতে পারে।

 

**কী কী করা যাবে না?**

১. গলায় বেশি হাতানো যাবে না।

২. গলার মুভমেন্ট কমিয়ে রাখতে হবে যতক্ষণ কাঁটা না বের হয়।

৩. কুসংস্কারের ওপর নির্ভর করবেন না, যেমন বিড়ালের পা ধরে মাফ চাওয়া।

৪. কবিরাজ বা ঝাড়ফুঁকওয়ালার কাছে যাওয়ার দরকার নেই, এতে বিপদ আরও বাড়তে পারে।

 

**কখন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে?**

যদি ঘরোয়া পদ্ধতিতে কাঁটা না নামানো যায়, তবে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। বিশেষ করে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে:

– তীব্র ব্যথা

– অতিরিক্ত রক্তপাত

– গলা ফুলে যাওয়া

– অতিরিক্ত লালা ঝরা

– শ্বাসকষ্ট

– বুকে ব্যথা

– খাবার বা পানি গিলতে সমস্যা হওয়া

 

— ডা. হিমেল কুমার বিশ্বাস, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা, স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট