ডেঙ্গু রোগের সময় সঠিক খাদ্য গ্রহণ রোগীর সুস্থতা নিশ্চিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডায়েটে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা উচিত:
1. **সহজে হজমযোগ্য খাদ্য**: সিদ্ধ খাবার, সবুজ শাকসবজি, কলা, আপেল, স্যুপ, দই এবং ভেষজ চা। এসব খাদ্য সহজে হজম হয় এবং শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে।
2. **প্রচুর তরল গ্রহণ**: ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করতে এবং ইলেকট্রোলাইট পুনরুদ্ধার করতে তাজা ফলের রস, ডাবের পানি এবং ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন (ওআরএস) গ্রহণ করা উচিত।
3. **ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার**: আমড়া, পেঁপে এবং কমলার রস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং দ্রুত নিরাময়ে সাহায্য করে।
4. **প্লাটিলেট গণনা বৃদ্ধিকারী খাবার**: ডালিমের রস, কালো আঙ্গুরের রস এবং সিদ্ধ সবজি প্লাটিলেট এবং রক্তের গণনা বাড়াতে সহায়তা করে।
5. **পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে সচেতনতা**: খাদ্যাভাসে যে পুষ্টি উপাদানগুলো অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে তা জানার চেষ্টা করুন এবং সেগুলো রোগ প্রতিরোধে কিভাবে সাহায্য করছে তা বোঝার চেষ্টা করুন।
6. **ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ**: ডেঙ্গুর কারণে শরীর থেকে প্লাজমা লিকেজ এবং ডায়রিয়া হতে পারে। তাই কমলার রস, ডাবের পানি, আদা পানি এবং স্যালাইন পানি (ওআরএস) খাওয়া প্রয়োজন, যাতে শরীর হাইড্রেটেড থাকে।
7. **আদা জল**: আদা জল ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের বমি বমিভাবের প্রভাব হ্রাস করতে সাহায্য করে।
8. **ডাবের পানি**: নারিকেল পানি শরীরের তরল মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান।
9. **হালকা স্যুপ**: স্যুপ ডেঙ্গুর লক্ষণগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার একটি কার্যকর উপায়, কারণ এটি হজমে সহায়ক এবং অন্ত্রের গতির জন্য ভালো।
10. **শাকসবজি ও ফলের রস**: গাজর, কমলা, আনারস, স্ট্রবেরি, পেয়ারা এবং কিউই জাতীয় ফল রোগীর প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
11. **পেঁপে**: পেঁপে ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে দ্রুত প্লাটিলেট উৎপাদন ট্রিগার করে।
**এড়িয়ে চলার খাবারসমূহ**:
– **তৈলাক্ত এবং মসলাদার খাবার**: এসব খাবার পেটের সমস্যা বাড়াতে পারে এবং রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটায়।
– **স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার**: চিনিযুক্ত এবং বায়ুযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন।
– **কাঁচা শাকসবজি**: এটি খাবার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত নয়।
**পরামর্শ**:
1. হালকা ডায়েটসহ প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খান।
2. বিছানা বিশ্রামের উপর গুরুত্ব দিন।
3. প্লাটিলেট গণনা এবং হেমাটোক্রিটের জন্য নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করান।
4. প্লাজমা লিকেজ প্রতিরোধের জন্য সময়মতো ব্যবস্থা নিন।
5. জ্বর বা ব্যথার জন্য অ্যাসপিরিন বা এনএসএআইডি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন, কারণ এগুলো পরিস্থিতি আরও জটিল করতে পারে।
লেখক: সামিয়া তাসনিম, পুষ্টিবিদ, ল্যাবএইড, গুলশান, ঢাকা