অ্যালার্জি একটি বহুল পরিচিত সমস্যা, যা হাঁপানির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। ফুলের পরাগ, দূষিত বাতাস, ধোঁয়া, কাঁচা রঙের গন্ধ, চুনকাম, ঘরের ধুলো এবং পুরনো ফাইলের ধুলো দেহে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া তৈরি করে এবং হাঁপানি রোগের সৃষ্টি করতে পারে। তাই যারা হাঁপানিতে ভুগছেন, তাদের উচিত এখনই এসব থেকে দূরে থাকা। অতিক্ষুদ্র উদ্ভিদ ছত্রাকও অ্যালার্জি এবং হাঁপানি সৃষ্টির অন্যতম কারণ। ২০ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এই ছত্রাক জন্মায় এবং ভেজা পরিবেশে এটি বৃদ্ধি পেতে পারে, যা শরীরে অ্যালার্জি এবং হাঁপানি সৃষ্টি করে। কিছু খাবার, যেমন পনির, পাউরুটি এবং কেক তৈরিতে ব্যবহৃত ইস্টজাতীয় ছত্রাকও অ্যালার্জির জন্য দায়ী।
**রোগের কারণ:** ঘরের ধুলো হাঁপানিজনিত অ্যালার্জির অন্যতম কারণ। প্রায় ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে ঘরের ধুলোর মধ্যে থাকা ক্ষুদ্র জীবাণু বা ‘মাইট’ অ্যালার্জির জন্য দায়ী। যারা হাঁপানিজনিত অ্যালার্জির সমস্যায় ভোগেন, তাদের ঘরের ধুলো এড়িয়ে চলা উচিত, বিশেষ করে ঘর ঝাড়ু দেওয়ার সময় এবং আসবাবপত্র, কম্বল, পর্দা, তোশক ও বালিশ পরিষ্কার করার সময়।
পতঙ্গের কামড়ও অ্যালার্জির কারণ হতে পারে, যেমন মশা, মৌমাছি, বোলতা ইত্যাদি। এছাড়াও গৃহপালিত পশু যেমন বিড়াল ও কুকুরের পালকের কারণেও অ্যালার্জি হতে পারে। একটি ত্বকের সমস্যা, যা আর্টিকোরিয়া বা আমবাত নামে পরিচিত, সেটিও অ্যালার্জির প্রভাব হিসেবে দেখা যায়, যেখানে ত্বকে চাকা চাকা দাগ পড়ে এবং ফুলে যায়।
**খাদ্যের মাধ্যমে অ্যালার্জি:** বিভিন্ন খাদ্যও অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। যেমন গরুর দুধ, গম, ডিম, মাছ, বাদাম, কলা, আপেল, আঙুর, তরমুজ এবং কিছু সবজি।
**প্রভাব:** অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া হিসেবে শরীরে বিভিন্ন আকারের লালচে দাগ এবং প্রচণ্ড চুলকানি দেখা দিতে পারে।
**ওষুধে অ্যালার্জি:** অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করেন, যা শরীরে অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে। তাই কোনো ওষুধ গ্রহণের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
অ্যালার্জি একটি প্রতিরোধযোগ্য সমস্যা। খেয়াল রাখতে হবে, খাবার বা পরিবেশের সঙ্গে অ্যালার্জির সম্পর্ক থাকলে সেই খাবার বা পরিবেশ থেকে দূরে থাকতে হবে।
লেখক: চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিশেষজ্ঞ
সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক
আল-রাজি হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা
০১৭১৫৬১৬২০০, ০১৮১৯২১৮৩৭৮