“স্ট্রোক মস্তিষ্কের রোগ, হার্টের রোগ নয়।” মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলটন হলে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ তথ্য জানান।বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জন আয়োজিত জনসচেতনতামূলক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, স্ট্রোক প্রধানত দুটি প্রকার হয়ে থাকে। যখন মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন হঠাৎ কমে যায় বা বন্ধ হয়ে যায়, তখন সেই অংশের কার্যক্ষমতা কিছু সময়ের জন্য বা সঠিক চিকিৎসা না পেলে স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এতে রোগী পক্ষাঘাতগ্রস্ত, কথা বলার অক্ষমতা, মুখ বাঁকা হয়ে যাওয়া, খিঁচুনি বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। একে ইস্কেমিক স্ট্রোক বলা হয়।
অন্যদিকে, মস্তিষ্কের রক্তনালী ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হলে তা ব্রেন হেমারেজ নামে পরিচিত এবং এর উপসর্গ সাধারণত আরও ভয়াবহ হয়। মস্তিষ্কের রক্তনালীর অন্যান্য রোগের কারণে রক্তপাত হয়ে স্ট্রোক হতে পারে, পাশাপাশি রক্তনালীর বিশেষ অংশ ফুলে গিয়ে ফেটে যাওয়া ধমনী ও শিরার অস্বাভাবিকতা থেকেও স্ট্রোক হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনসের সদস্য সচিব ডা. নুরুজ্জামান খান বলেন, “স্ট্রোক মস্তিষ্কের রোগ, হার্টের রোগ নয়। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা রক্ত সঞ্চালন হঠাৎ কমে গেলে স্ট্রোক হয়ে থাকে। বিশ্বজুড়ে পঙ্গুত্বের প্রধান কারণ স্ট্রোক এবং এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিহ্নিত। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব।”
বিএসএমএমইউ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “অল্প বয়সী মানুষের স্ট্রোকের অন্যতম কারণ হল ড্রাগ। তরুণ সমাজ বর্তমানে একটি সুন্দর বিপ্লবের সূচনা করেছে, তাই নেশাজাতীয় দ্রব্য সরবরাহকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
বিশ্ব স্ট্রোক দিবস ২০২৪ উপলক্ষে বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনস আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডা. মো. মওদুদুল হক, ডা. মো. নুরুজ্জামান খান, ডা. মো. জাহিদ রায়হান প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনের আগে একটি জনসচেতনতামূলক র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত, বিশ্বে প্রতি বছর ২১ অক্টোবর স্ট্রোক দিবস পালিত হয়, যার মূল উদ্দেশ্য হল স্ট্রোকের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং কীভাবে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা যায়, সেই সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করা। ২০২৪ সালের বিশ্ব স্ট্রোক দিবসের থিম হলো “Greater than Stroke Active Challenge,” যার মাধ্যমে শারীরিক পরিশ্রম ও খেলাধুলার মাধ্যমে স্ট্রোকের ভয়াবহতা কমানো এবং স্ট্রোক-পরবর্তী পুনর্বাসনের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।