দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০৭:৩০

টক ঢেকুর বা বুক জ্বালাপোড়া প্রতিরোধে কী করবেন

পেট পুরে খাবার খাওয়ার পর অধিকাংশ মানুষ শরীর ও মনে প্রশান্তির প্রত্যাশা করেন। কিন্তু কিছু মানুষের জন্য খাবার খাওয়ার পর সমস্যা শুরু হয়। তাদের ক্ষেত্রে খাবার খাওয়ার পর গলা দিয়ে টক ঢেকুর ওঠা, গলা জ্বলা বা অস্বস্তি অনুভূত হয়। কিছু মানুষের বুকের মাঝখানে জ্বলুনি বা ব্যথা হতে পারে। কখনো তারা অস্বস্তিকর কাশি, রাতে ঘুমানোর সময় গলা খুসখুস করা, শ্বাসকষ্ট এবং প্রচণ্ড কাশির মতো সমস্যায়ও ভুগতে পারেন এবং এর জন্য চিকিৎসকের কাছে যেতে বাধ্য হন।

 

সাধারণভাবে খাবার খাওয়ার পর তা খাদ্যনালির মাধ্যমে পাকস্থলীতে পৌঁছে যায়। খাদ্যনালির শেষ মাথায় একটি দরজা থাকে, যাকে ‘লোয়ার ইসোফেজিয়াল স্ফিংটার’ বলা হয়। এর কাজ হচ্ছে খাবারকে ওপরের দিকে বা পেছনে যেতে বাধা দেওয়া। যখন এই স্ফিংটারের পেশি দুর্বল হয়ে যায়, তখন আধা হজম খাবার ও পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালির দিকে উল্টোভাবে চলে আসতে পারে। এর ফলে টক ঢেকুর, বুক জ্বালাপোড়া এবং অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়।

 

এই সমস্যার জন্য কিছু কারণ দায়ী, যেমন স্থূলতা, গর্ভাবস্থা, হায়াটাল হার্নিয়া, এবং বিরল রোগ যেমন স্ক্লেরোডারমা। অ্যালকোহল ও ক্যাফেইনও গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (জিইআরডি) এর সঙ্গে সম্পর্কিত। ভারী বা চর্বিযুক্ত খাবার খেলে এই উপসর্গ বাড়তে পারে, এবং খুব আঁটসাঁট পোশাক পরলেও সমস্যা হতে পারে।

 

এ সমস্যা শনাক্ত করতে অনেক সময় রোগ লক্ষণই যথেষ্ট। তবে কখনো কখনো এন্ডোস্কপি পরীক্ষা, খাদ্যনালির স্ফিংটারের কার্যকারিতা যাচাই বা অ্যাসিডের মাত্রা নির্ধারণের জন্য অতিরিক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে। জিইআরডির কারণে শুধু শারীরিক অস্বস্তি নয়, দীর্ঘকাল ধরে এটি চলতে থাকলে খাদ্যনালির আলসার, খাদ্যনালি সরু হয়ে যাওয়া, এমনকি পাকস্থলীর অম্লরস খাদ্যনালির স্থায়ী পরিবর্তন ঘটিয়ে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সুতরাং, জিইআরডি চিকিৎসা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

### প্রতিরোধের উপায়:

 

1. **একসঙ্গে খুব ভরপেট খাবেন না।**

2. **খাবার খেয়ে শুয়ে পড়বেন না।**

3. **খাবারের পর পেটে চাপ পড়ে এমন কাজ করবেন না।**

4. **ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।**

5. **ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করুন।**

6. **অতিরিক্ত তেল-চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।**

 

কিছু ওষুধ পাকস্থলীর অ্যাসিড ক্ষরণ কমাতে সহায়তা করে, এবং অ্যান্টাসিডজাতীয় ওষুধ অ্যাসিড উপশমে সাহায্য করতে পারে। তবে, কখনো কখনো ওষুধ কার্যকর না হলে অপারেশনও প্রয়োজন হতে পারে। সঠিক নিয়ম মেনে চললে জিইআরডির সমস্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব।

 

— ডা. শাহনূর শারমিন, সহযোগী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট