বিলম্বে হাড় জোড়া লাগা একটি গুরুতর সমস্যা। প্রতিদিন অনেক রোগীর হাড় ভাঙে, এবং সঠিক চিকিৎসা পেলে কিছুদিনের মধ্যেই হাড় জোড়া লাগে। তবে হাড়ভাঙা-পরবর্তী সময়ে কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে, যা জোড়া লাগার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে।অনেক সময় দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার কারণে জয়েন্ট শক্ত হয়ে যায়, মাংসপেশি শুকিয়ে যেতে পারে, এবং সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকে। পাশাপাশি কিছু শারীরিক অসুস্থতা রোগীর হাড় জোড়া লাগার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করতে পারে।
হাড় ভাঙার ধরণ, ভাঙার স্থান এবং রোগীর শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে হাড় জোড়া লাগার সময়সীমা ভিন্ন হতে পারে। যদি চার থেকে ছয় মাসের মধ্যেও হাড় জোড়া না লাগে, তাকে **ডিলেইড ইউনিয়ন** বা বিলম্বিত জোড়া বলা হয়। আর ৯ থেকে ১২ মাস পার হয়ে গেলে, তা **নন-ইউনিয়ন** বা জোড়া না লাগার সমস্যায় পরিণত হয়।
### বিলম্বিত জোড়ার সম্ভাব্য কারণগুলো:
– **বয়সজনিত দুর্বলতা**: বয়স্কদের হাড় সাধারণত ভঙ্গুর হয়, বিশেষ করে অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হলে।
– **দীর্ঘমেয়াদি ডায়াবেটিস**: ডায়াবেটিসের কারণে হাড়ের জোড়া লাগার প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়।
– **অপুষ্টি, ধূমপান ও অন্যান্য রোগ**: অপুষ্টি, ধূমপান, মেটাবলিক রোগ, অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ বা স্টেরয়েডের ব্যবহার, এবং একাধিক ফ্র্যাকচার থাকলে সমস্যা জটিল হয়।
– **রক্ত সরবরাহের অভাব**: হাড় জোড়া লাগতে সঠিক রক্ত সরবরাহের প্রয়োজন হয়। রক্ত সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটলে হাড় জোড়া লাগতে দেরি হয়।
– **সংক্রমণ**: সংক্রমণও একটি বড় বাধা হিসেবে কাজ করে।
যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাড় সঠিকভাবে জোড়া না লাগে, চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে ওষুধ ও অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। অনেক ক্ষেত্রেই ফিজিওথেরাপি ও ইলেকট্রো থেরাপির মাধ্যমে রোগীরা উপকার পেতে পারেন।
বর্তমানে **মাইক্রো কারেন্ট ইলেকট্রিক স্টিমুলেশন** প্রযুক্তির মাধ্যমে হাড়ের নিরাময় দ্রুত করা সম্ভব হয়, তবে এটি শুধুমাত্র প্রচলিত চিকিৎসা ব্যর্থ হলে প্রয়োগ করা উচিত।
ডিলেইড ইউনিয়ন ও নন-ইউনিয়নের সমস্যাগুলো রোগীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়, এবং কেউ কেউ আজীবন পঙ্গুত্বের শিকার হন।