দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ১১:২৯

যেসব খাবারে ভারী ধাতু আছে, সেগুলো খাওয়ার আগে কী করবেন

**সম্প্রতি বেশ কিছু শাকসবজি ও ফলমূলে ভারী ধাতুর উচ্চ মাত্রার উপস্থিতির খবর এসেছে। খাবারে ভারী ধাতু থাকলেও, যদি তা সহনীয় মাত্রায় থাকে, তাহলে ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে, সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি ভারী ধাতুযুক্ত ফলমূল ও শাকসবজি খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে।**

 

### অতিরিক্ত ভারী ধাতুর উপস্থিতি

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ৭৫ শতাংশ শাকসবজি ও ফলমূলে সহনীয় মাত্রার দ্বিগুণের বেশি সিসা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বেগুনে ক্যাডমিয়াম সহনীয় মাত্রার চেয়ে চার গুণ বেশি পাওয়া গেছে। যেসব স্থানে এসব শাকসবজি উৎপাদিত হচ্ছে, সেখানে সিসা, ক্যাডমিয়াম, তামা ও দস্তার উপস্থিতি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।

 

ডিমে ১০ ধরনের ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ৬টি ধাতুর উপস্থিতি সর্বোচ্চ অনুমোদিত মাত্রার (ম্যাক্সিমাম পার্মিসিবল লিমিট বা এমপিএল) মধ্যে রয়েছে, তবে বাকি ৪টি (দস্তা, তামা, সিসা ও লোহা) ধাতুর উপস্থিতি এমপিএলের চেয়ে বেশি।

 

শাকসবজির মধ্যে লালশাকে এবং ফলের মধ্যে লিচুতে সবচেয়ে বেশি ভারী ধাতুর উপস্থিতি দেখা গেছে। এছাড়া শিম, শসা, ঢ্যাঁড়স, পটোলেও ক্রোমিয়ামসহ অন্যান্য ভারী ধাতুর উচ্চ মাত্রা রয়েছে।

 

### স্বাস্থ্যঝুঁকি

ভারী ধাতু যেমন ক্যাডমিয়াম বা পারদ ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে, এবং ক্রোমিয়াম ক্যান্সার সৃষ্টির সাথে জড়িত। ক্যাডমিয়াম হাড়ের রোগ সৃষ্টি করে, আর পারদ ও সিসা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে। এসব ধাতু পানি, মাটি ও খাদ্যে প্রবেশ করে মানবস্বাস্থ্যের গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করে, যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ক্যানসার ও অপুষ্টি।

 

সিসার দূষণ শিশুদের মানসিক বিকাশে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে নিউরোলজিক্যাল ও কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। কিছু ভারী ধাতু, যেমন লেড এবং ক্যাডমিয়াম, ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে এবং হাড়ের ক্ষয়রোগ, হৃদরোগ, কিডনির সমস্যা ইত্যাদি সৃষ্টি করতে পারে।

 

### ভারী ধাতুযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ

যেহেতু অতিরিক্ত ভারী ধাতু পাওয়া শাকসবজি ও ফলমূল এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়, সেহেতু সেগুলো সহনীয় মাত্রায় গ্রহণ করা উচিত। খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন ধরনের শাকসবজিকে প্রাধান্য দিন এবং প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সবজি না খেয়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খান।

 

বেগুন, বাঁধাকপি, শিম, শসা, ঢ্যাঁড়স, পটোল, টমেটো এবং লালশাকে ভারী ধাতুর উপস্থিতি বেশি, তাই এগুলো সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন খাওয়া যেতে পারে। এতে শরীরে ভারী ধাতুর জমা হওয়ার ঝুঁকি কমে।

 

### গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁদের শরীরে ক্যালসিয়াম, আয়রন ও জিংকের ঘাটতি রয়েছে, তাঁদের শরীরে ক্যাডমিয়াম বেশি শোষিত হয়। তাই, নিয়মিত ক্যালসিয়াম, আয়রন ও জিংকসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে ক্যাডমিয়াম টক্সিসিটি সৃষ্টি হতে পারে না।

 

এছাড়া, ভারী ধাতু মুক্ত শাকসবজি ও ফলমূল উৎপাদনের জন্য উৎপাদন প্রক্রিয়া নিয়মিত তদারক, উত্তম কৃষিচর্চা, কৃষকদের প্রশিক্ষণ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট