মনি কিশোর আবার গানে ফিরতে চেয়েছিলেন। তিনি নিজের জনপ্রিয় গান ‘কি ছিলে আমার, বলো না তুমি’ নতুন করে গাইতে চান এবং আরও অনেক গান তৈরি করে রেখেছিলেন। কিন্তু সব ইচ্ছাই অধরাই রয়ে গেল। নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পী আর গানে ফিরতে পারলেন না। ৬৬ বছর বয়সী মনি কিশোরের মরদেহ রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, বেশ ক’দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে।
রামপুরা টিভি সেন্টার রোডে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। রামপুরা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান আকন জানান, ৩৩৫ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে একা থাকতেন মনি কিশোর। গত কয়েকদিন ধরে তিনি বাসা থেকে বের হননি। বাড়ির মালিক বিষয়টি সন্দেহ করে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ওসি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে তিনি তিন-চার দিন আগে মারা গেছেন এবং শুনেছেন যে তিনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। মরদেহ উদ্ধার করার পর সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নব্বইয়ের দশকে একের পর এক ক্যাসেট প্রকাশ হয়েছিল মনি কিশোরের, যা ছিল ব্যবসাসফল। তার বহু গান শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। এই জনপ্রিয় শিল্পী পাঁচ শতাধিক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। যদিও রেডিও এবং টিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে তিনি সেখান থেকে অল্প গান গেয়েছেন, মূলত অডিওতে বিরামহীনভাবে গান করেছেন। ৩০টির বেশি একক অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে তার।
মনি কিশোরের সবচেয়ে জনপ্রিয় গান ‘কি ছিলে আমার, বলো না তুমি’। অন্যান্য জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘সেই দু’টি চোখ কোথায় তোমার’, ‘তুমি শুধু আমারই জন্য’, ‘মুখে বলো ভালোবাসি’, এবং ‘আমি মরে গেলে জানি তুমি…’। তার লেখা ও সুর করা গানের সংখ্যা ২০টির মতো। তিনি পুলিশ কর্মকর্তা বাবার সাত সন্তানের মধ্যে চতুর্থ সন্তান। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে বিয়ে করলেও দেড় যুগ আগে তার স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে, এরপর থেকে একা জীবনযাপন করছিলেন। তার একমাত্র মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন।
মনি কিশোর নামে সংগীতাঙ্গনে পরিচিত হলেও তার প্রকৃত নাম মনি মণ্ডল। কিশোর কুমারের ভক্ত হওয়ায় তিনি নামের সঙ্গে ‘কিশোর’ যুক্ত করেছিলেন।