গত কোরবানির ঈদের পর থেকে চলচ্চিত্রে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। বিশেষ করে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান, শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রেক্ষাপটে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল না। বর্তমানে হলে দর্শক টানতে ব্যর্থ দেশি-বিদেশি সিনেমাগুলো, আর মুক্তি পাওয়া যে দু-একটি বাংলা সিনেমা রয়েছে, সেগুলোও মুখ থুবড়ে পড়েছে। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বড় কোনো সিনেমা এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে পারে।
অন্যদিকে, দর্শকদের আগ্রহ এখন ওটিটির দিকে বেশি। দেশের বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে একের পর এক সিনেমা, ওয়েব ফিল্ম এবং সিরিজ মুক্তি পাচ্ছে। তবে আশার খবর হচ্ছে, সার্টিফিকেশন বোর্ড গঠন হয়েছে, ফলে গত সরকারের আমলে আটকে থাকা ছবিগুলোও মুক্তির জন্য বোর্ডের অনুমতি পাবে। সর্বশেষ রায়হান রাফী পরিচালিত ‘তুফান’ সিনেমাটি কোরবানির ঈদে মুক্তি পেয়ে চমৎকার ব্যবসা করেছিল, কিন্তু এরপর কোনো ছবিই দাঁড়াতে পারেনি।
এছাড়া, রায়হান রাফী ওপার বাংলার জিৎ ও দেশের শরিফুল রাজকে নিয়ে ‘লায়ন’ সিনেমার ঘোষণা দিয়েছেন, যা আগামী ঈদে মুক্তি পাবে। কোরবানির ঈদেও এই নির্মাতা নতুন চমক দিতে প্রস্তুত। সিয়াম আহমেদ এবং বুবলী অভিনীত ‘জংলি’ ছবিটি মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। বিদ্যা সিনহা মিমের ‘আমি ইয়াসমিন বলছি’ সহ বেশ কয়েকটি নতুন সিনেমার ঘোষণা এসেছে, কিন্তু মুক্তি ও শুটিংয়ের ক্ষেত্রে বারবার বাধা আসছে। বেশ কয়েকজন পরিচালক ও প্রযোজকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সিনেমা মুক্তি দিলে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের মতে, এই বছর সিনেমার বাজার চাঙ্গা হওয়ার সম্ভাবনা নেই, কারণ দেশের পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক নয় এবং কোনো উৎসবও নেই। শাকিব খানের ‘দরদ’ সিনেমাটি চলতি বছর মুক্তির কথা রয়েছে, কিন্তু এই নায়ক নিজেও চান না এ বছর ছবিটি মুক্তি পাক। কারণ, গত দুই বছরে শাকিব খানের সব ছবিই সফল হয়েছে। তাই ‘দরদ’ মুক্তির তারিখ আগামী বছরের শুরুতে পরিবর্তন করার সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন বড় ছবির শুটিংও ডিসেম্বরের আগে শুরু হওয়ার আশা নেই। সব মিলিয়ে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের নতুন বছরের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।