দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০৪:৫৫

নতুন নাকি পুরোনো ‘কিলার’ বেশি ভালো?

১৯৮৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য কিলার’ প্রথমে হংকংয়ে তেমন সাড়া ফেলতে না পারলেও, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দ্রুতই জনপ্রিয়তা পায়। পরবর্তী তিন দশকে এটি সর্বকালের অন্যতম সেরা অ্যাকশন সিনেমা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ৩৫ বছর পর পরিচালক জন উ নিজেই তাঁর এই কালজয়ী সিনেমাটির রিমেক করেছেন। ২৩ আগস্ট পিকক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে নতুন ‘দ্য কিলার’। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই রিমেক কি জন উর আগের সেই জাদু ধরে রাখতে পেরেছে, নাকি ম্লান হয়ে গেছে?

 

জন উকে অ্যাকশন সিনেমার মাস্টার বলা হয়, এবং সিনেমাপ্রেমীরা তা ভালোভাবেই জানেন। তাঁর সিনেমায় বুলেট, লড়াই, ও রক্তের উপস্থিতি যেন স্বাভাবিক বিষয়। জন উর সিনেমার অ্যাকশন দৃশ্যগুলো গল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠে, আর প্রতিটি দৃশ্যেই নতুন স্টাইল ও স্লো মোশনের ব্যবহার তাঁকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। ১৯৮৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আ বেটার টুমরো’র সাফল্যের তিন বছর পর জন উ নিয়ে আসেন ‘দ্য কিলার’, যেখানে আততায়ী জংয়ের গল্প বলা হয়। ফরাসি চলচ্চিত্র ‘লে সামুরাই’ এবং মার্কিন সিনেমা ‘মিন স্ট্রিটস’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে জন উ তৈরি করেন এই সিনেমা, যা ছিল জঁ-পিয়ের মেলভিল এবং মার্টিন স্করসেজির প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা।

 

‘দ্য কিলার’ মুক্তির পর থেকে এটি কেবল কোয়েন্টিন টারান্টিনো, রবার্ট রদ্রিগেজ, ও জনি টোর মতো পরিচালকদের প্রেরণাই হয়নি, বরং লুক বেসোঁর মতো নির্মাতার সিনেমাতেও এর প্রভাব লক্ষণীয়। বিশেষ করে তাঁর ‘লা ফাম নিকিতা’ এবং ‘লিওঁ’ সিনেমাগুলোতে ‘দ্য কিলার’-এর প্রভাব স্পষ্ট।

 

জন উ বহুদিন ধরেই এই ছবির হলিউড রিমেকের পরিকল্পনা করছিলেন। নব্বইয়ের দশকে রিচার্ড গিয়ার, ডেনজেল ওয়াশিংটনের অভিনয়ের কথা শোনা গেলেও, প্রকল্পটি তখন এগোয়নি। ২০০৭ সালে কোরীয়-মার্কিন নির্মাতা জন এইচ লি ‘দ্য কিলার’ রিমেকের ঘোষণা দিলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। এরপর ২০১৭ সালে জন উ ফের শুরু করেন রিমেকের কাজ, কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে তা বারবার পিছিয়ে যায়। অবশেষে ২০২4 সালে ছবিটি মুক্তি পেল।

 

এই নতুন সংস্করণে মূল গল্পের কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। হংকংয়ের বদলে ফ্রান্সকে প্রেক্ষাপট করা হয়েছে, আর পুরুষ আততায়ী জংয়ের বদলে এবার নারীর চরিত্রে দেখা যায় নাতালি ইমানুয়েলকে। তবে বেশিরভাগ সমালোচকের মতে, নতুন সিনেমাটি আগের মতো জমেনি। মূল সিনেমায় যে অ্যাকশন ও আবেগের মিশ্রণ ছিল, তা নতুনটিতে অনুপস্থিত। মূল চরিত্রে ইমানুয়েলের অভিনয় ভালো হলেও, তার ও গায়িকা জিনের মধ্যকার সম্পর্কের রসায়ন সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি।

 

তবে দুর্দান্ত আবহসংগীত, নাতালি ইমানুয়েলের চমৎকার অভিনয় এবং পুরোনো সিনেমার নস্টালজিয়ার কারণে ছবিটি একবার দেখা যেতেই পারে, যদিও এটি মূল ছবির মানদণ্ডে ততটা উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারেনি।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট