‘আই লাভ মানি। টাকা কে না ভালোবাসে, বলতে পারেন?’ মুচকি হেসে বললেন বিদ্যা বালান। গত বুধবার ভারতের একটি শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হলো এই বলিউড তারকার নাম। মুম্বাইয়ের একটি পাঁচতারা হোটেলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিদ্যা তাঁর জীবনে এবং একজন নারীর জীবনে অর্থ কতটা জরুরি, তা নিয়ে কথা বলেছেন।
খুব বাজে সময় পার করছিলাম। অর্থের শক্তি কতখানি, কয়েক বছর আগে বুঝেছি। আর অর্থ শুধু উপার্জন করলেই হবে না। নিজের অর্থের দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে। কীভাবে অর্থ ব্যয় করতে হবে, সাশ্রয় করতে হবে আর কীভাবে উপার্জিত অর্থ আরও বাড়ানো যায়, এসবও জানতে হবে।
কোনো রাখঢাক নেই। শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়ায় দারুণ খুশি অভিনেত্রী। জানালেন, দীর্ঘদিনের একটা ইচ্ছা পূরণ হলো। এ প্রসঙ্গে বিদ্যা বলেন, ‘২০১১ সালে “দ্য ডার্টি পিকচার” মুক্তির পর আমি অনেক “এনডোর্সমেন্ট”-এর প্রস্তাব পেয়েছিলাম। শুধু গাড়ি আর ব্যাংকের পাইনি। আমি তখন সত্যি অবাক হয়েছিলাম। আজ আমার সেই ইচ্ছা পূরণ হলো।’
বিদ্যার মতে, প্রত্যেক নারীরই আর্থিক স্বাধীনতার খুব প্রয়োজন। কেননা তিনি মনে করেন, টাকাই পারে মানুষের স্বপ্ন পূরণ করতে।
অভিনেত্রীর ভাষ্য, ‘টাকা শুধু আপনাকে শক্তি বা বস্তুগত জিনিস দেয়, তা কিন্তু নয়। টাকা আপনাকে নিরাপত্তাও দেয়। আপনি জীবনে যেভাবে বাঁচতে চান, তা টাকা দিয়েই বাস্তবায়ন সম্ভব। টাকা যে সব খুশি দেয়, তা নয়। কিন্তু টাকা আমাদের জীবনের খুব জরুরি একটা উপাদান। টাকাই আপনাকে দিতে পারে সুন্দর আর পরিপূর্ণ এক জীবন।’
সবার কাছে যে বিপুল অর্থ থাকবে, তা কিন্তু নয়। কিন্তু মানুষের কাছে অতটুকু অর্থ থাকা প্রয়োজন, যা তাকে আত্মনির্ভরশীল হতে সাহায্য করবে। দ্য ডার্টি পিকচার অভিনেত্রী মনে করেন, ‘আমি আমার জন্য যথেষ্ট, এই আত্মবিশ্বাস সবার থাকা প্রয়োজন।’
নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বিদ্যা বলেন, ‘খুব বাজে সময় পার করছিলাম। অর্থের শক্তি কতখানি, কয়েক বছর আগে বুঝেছি। আর অর্থ শুধু উপার্জন করলেই হবে না। নিজের অর্থের দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে। কীভাবে অর্থ ব্যয় করতে হবে, সাশ্রয় করতে হবে আর কীভাবে উপার্জিত অর্থ আরও বাড়ানো যায়, এসবও জানতে হবে। আমি মনে করি, আর্থিক স্বাধীনতা প্রত্যেকটা মেয়েকে শক্তি জোগায়।’ বিদ্যার অবস্থান পরিষ্কার, ‘নিজেকে ভালোবাসলে অর্থকেও ভালোবাসবেন। আমি নিজেকে ভালোবাসি, তাই অর্থকেও ভালোবাসি।’
কথায়–কথায় বিদ্যা জানালেন, বিয়ের আগে তাঁর আর্থিক দিকটা দেখতেন বাবা। বাবাই সবকিছু সামলাতেন। বিয়ের সময় বাবা বিদ্যাকে পরামর্শ দিলেন, আর্থিক দিকটা যেন তিনি স্বামীকে সামলাতে দেন। বাবার কথা শুনে মন খারাপ হয়েছিল।
বাবাকে সেদিন আক্ষেপ নিয়ে বলেছিলেন, ‘এত দিন আপনি সবকিছু সামলেছেন, এখন আমার স্বামীর কথা বলছেন। আচ্ছা পিতাজি, অর্থ সামলানোর বিষয়ে আপনি কি আমার ওপর ভরসা করেন না?’ বিদ্যা সেদিন বাবাকে কথা দিয়েছিলেন, সব শিখে নেবেন।
অনুষ্ঠানে বিদ্যার অভিনয়সত্তা নিয়েও কথা ওঠে। বায়োপিক না কমেডি, কোন ধরনের ছবি করতে ভালোবাসেন, জানতে চাইলে বিদ্যার জবাব, ‘অবশ্যই কমেডি। আমি হাসতে ভালোবাসি। আর কমেডি ছবিতে অভিনয় করার জন্য আমি ব্যাকুল। মানুষকে হাসানোর মতো সেরা কাজটা আমি করতে পারি।’
এদিন “পরিণীতা”র কথাও উঠে আসে। ক্যারিয়ারের শুরুতে প্রদীপ সরকারের এ ছবিতে সাইফ আলী খান, সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে বিদ্যাকে দেখা গিয়েছিল। ‘সত্যি বলতে, আমার মাথায় তখন অন্য কিছু ছিল না। শুধু ভেবেছিলাম, একটা সুযোগ পেয়েছি, আর এটা আমাকে কাজে লাগাতেই হবে। আমার থেকে তখন প্রচুর প্রত্যাশা। আমার আগে এই ছবিতে মীনাকুমারী, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের মতো অভিনেত্রীরা কাজ করেছেন। আমি ইচ্ছা করেই তাঁদের অভিনীত ছবিগুলো দেখিনি। পরিণীতা মুক্তির পর যখন বিমল রায়ের ছবিটা দেখি, মনে হয়েছিল ভালোই হয়েছে, আগে দেখিনি।’