৯৭তম একাডেমি অ্যাওয়ার্ডসে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন অ্যাড্রিয়েন ব্রডি। ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য এ পুরস্কার পান তিনি। আজ সকালে লস অ্যাঞ্জেলেসের ডলবি থিয়েটারে শুরু হয়েছে অস্কার পুরস্কার। সেখানেই দ্বিতীয়বার অস্কার উঠল ব্রডির হাতে। এর আগে চলতি বছর একই সিনেমার জন্য গোল্ডেন গ্লোবেও সেরা অভিনেতা হয়েছেন তিনি।
পুরস্কার গ্রহণ করে ব্রডি বলেন, ‘যুদ্ধ, নিপীড়নের দীর্ঘস্থায়ী ট্রমা, ইহুদিবিদ্বেষ, বর্ণবাদ এবং অন্য বিষয়গুলোর প্রতিনিধিত্ব করতে আমি আবার এখানে এসেছি। আমি সবাইকে নিয়ে একটি সুখী পৃথিবীর জন্য প্রার্থনা করি। আমি বিশ্বাস করি, ঘৃণা দিয়ে কিছু হয় না; অতীত আমাদের এ শিক্ষাই দেয়।’
এবারের অস্কারে ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’ মনোনয়ন পেয়েছে ১০ ক্যাটাগরিতে। এর মধ্যে আছে সেরা সিনেমা, সেরা নির্মাতা, সেরা অভিনেতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’ আলোচনায় আসে গত বছরের ভেনিস উৎসবে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও হাঙ্গেরির যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত সিনেমাটির জন্য সেরা নির্মাতার পুরস্কার জেতেন করবেট। পরে ২০ ডিসেম্বর মুক্তি পায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাগৃহে। সমালোচকদের কাছে ব্যাপক প্রশংসা পায়।
আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট ২০২৪ সালের যে সেরা ১০ সিনেমার তালিকা করেছিল, সেখানেও ছিল ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’। কেবল সমালোচকেরাই নন, সাধারণ দর্শকেরও ভালোবাসা পেয়েছে সিনেমাটি। ৯ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার বাজেটের সিনেমাটি আয় করেছে ৩৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার।
হাঙ্গেরির গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া এক তরুণ স্থপতির গল্প নিয়ে ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’। যে স্থপতি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে তার ‘আমেরিকান ড্রিম’ বাস্তবায়ন করতে চায়। ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’ এখন অনেক প্রশংসা পেলেও নির্মাণের আগে করবেটের কাছে এটি দূরতম কল্পনাতেও ছিল না। চলতি বছরের শুরুতে গোল্ডেন গ্লোবে সেরা নির্মাতার পুরস্কার জয়ের পর তিনি বলেন, ‘ইতিহাস খুঁড়ে কেউ আমাকে সেই ১৯৪০ সালের গল্প তুলে আনতে বলেনি; বরং বলা হয়েছিল, সাড়ে তিন ঘণ্টার এ ছবি কেউ দেখতে আসবে না।’
এ সিনেমা যেন অভিনেতা হিসেবে অ্যাড্রিয়েন ব্রডির ক্যারিয়ারে নতুন বাঁকবদল এনে দিয়েছে। ২০০২ সালে ‘দ্য পিয়ানিস্ট’-এর জন্য ২৯ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে অস্কার জেতেন ব্রডি। এরপর সাম্প্রতিক সময়ে বলার মতো তেমন কোনো কাজ নেই। এ সিনেমা দিয়ে সেরা অভিনেতার পুরস্কার জেতা ব্রডির জন্যও তাই অন্য রকম ফেরা। ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’-এর মতো রোমান পোলানস্কির সে ছবিতেও এক ইহুদির চরিত্রের অভিনয় করেছিলেন, যে গণহত্যা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে!
গণহত্যা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে, এমন চরিত্রে সঙ্গে ব্রডি যে এত ভালোভাবে মানিয়ে যান, তার একটা অন্য কারণও আছে। অভিনেতার নিজের মা এবং দাদা-দাদি ১৯৫০-এর দশকে হাঙ্গেরি ছেড়ে পালিয়ে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে! তাই ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’-এর গল্প ব্রডির কাছে তাই ‘একান্তই ব্যক্তিগত’।