‘দ্য সাইলেন্স’, ‘ইনফিনিটি’, ‘রুমি’, ‘প্যাফ ড্যাডি’, ‘১৯৭১ সেই সব দিন’—গত কয়েক বছরে ওটিটি ও বড় পর্দার বেশ কয়েকটি আলোচিত কাজে দেখা গেছে আবদুন নূর সজলকে। তবে ‘জ্বীন’ সিনেমার রাফসান চরিত্রটি তাঁর একটু বেশিই প্রিয়। সজল বরাবরই রোমান্টিক চরিত্রে অভিনয় করেন, তবে রাফসান চরিত্রটি তাঁকে দিয়েছিল ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। সম্প্রতি ‘জ্বীন ৩’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। এবার তাঁকে দেখা যাবে বিজয় চরিত্রে।
‘“জ্বীন” সিনেমাটি আমার ক্যারিয়ারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। সিনেমাটি ভালো ব্যবসাও করেছে। এবার “জ্বীন ৩” নিয়ে যুদ্ধ হবে আমার নিজের সঙ্গেই; নিজেকে কতটা ছাড়িয়ে যেতে পারব, সেই চাপ টের পাচ্ছি। এটা আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং। কারণ, আমি আরও ভালো করতে চাই।’ বলেন সজল। জানালেন, চরিত্রটিতে আরও ভালো করার জন্য এক মাসের বেশি সময় ধরে প্রি-প্রোডাকশনে সময় দিয়েছেন। নিয়মিত অনুশীলনে অংশ নিয়েছেন। নিজেকে পুরো ফিট করেই শুটিংয়ে নেমেছেন তিনি।
রোমান্টিক নায়ক যখন অ্যাকশনে
সব সময়ই সজলের ইচ্ছা ছিল বাণিজ্যিক সিনেমায় নাম লেখানোর। কিন্তু নাটকে অভিনয়ের কারণে সিনেমা নির্মাতা ও প্রযোজকদের কাছে সেই আস্থাই তৈরি করতে পারেননি। ২০১১ সালে ‘নিঝুম অরণ্য’ দিয়ে বড় পর্দায় পথচলা শুরু হলেও পরে আর মনের মতো গল্প পাচ্ছিলেন না। দীর্ঘ বিরতির পর করেন ‘জ্বীন, ‘১৯৭১ সেই সব দিন’—এরপর আবার অপেক্ষা। সজল বলেন, ‘এখন আর যেকোনো গল্পে কাজ করছি না। আমি নিজে দর্শক হিসেবে সন্তুষ্ট হলেই সিনেমা করব। এতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করলেও সমস্যা নেই। মাঝখানে এই সিনেমার প্রস্তাব পেয়েই রাজি হয়ে গেলাম। প্রেম, রোমাঞ্চ, হররের মিশেলে গল্প, নাচ-গানও আছে; এমন কিছুর জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।’
দীর্ঘ দুই দশকের ক্যারিয়ার নিয়ে কোনো আফসোস নেই সজলের। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পেয়েছেন। জানালেন, বেশি প্রত্যাশাই তাঁকে লোভী বানিয়েছে। ‘যাকে আমি চিনি না জানি না, তিনিই দেখা হলে আমার কাজের প্রশংসা করছেন। অচেনা একজনের মনের মধ্যে জায়গা করে নেওয়া কঠিন। ভক্তদের এই ভালোবাসাই আমার শক্তি, প্রেরণা। ক্যারিয়ার নিয়ে খুশি। প্রত্যাশা আমাকে লোভী বানিয়েছে। আমি কাজের জায়গায় লোভী। আরও চ্যালেঞ্জিং, দর্শক পছন্দ করবে, আগের সব কাজকে ছাড়িয়ে যাবে—এমন কাজের লোভ সামলানো কঠিন।’
নাটক থেকে দূরে
নাটক দিয়েই ভক্তদের কাছে পরিচিতি পান। সেই নাটক থেকেই দূরে। অভিমানেই নাটক থেকে দূরে সরেছেন বলে জানালেন তিনি। ‘জনপ্রিয়তা পাব কিন্তু গল্পে তেমন কিছুই নেই, সেই কাজ আমি করতে চাই না। অভিনয়টা একটা দায়বদ্ধতার জায়গা। প্রত্যেক শিল্পীর দায়িত্ববোধ রয়েছে। দীর্ঘ সময় যে গল্প পেয়েছি, সেগুলো দর্শক ও অভিনেতা হিসেবে ভালো লাগেনি। এখন আর ভালো গল্প না হলে কাজ করব না। প্রয়োজনে বছরের পর বছর বসে থাকব। আমার কোনো তাড়াহুড়া নেই। তবুও সবাইকে বলতে পারব, এমন গল্পেই কাজ করব।’ বলেন এই অভিনেতা।
বিয়ে নিয়ে কথা নয়
দুই বছর আগে বিয়ে করার কথা জানিয়েছিলেন। তবে আপাতত বিয়ে নিয়ে ভাবছেন না। বিয়ে ক্যারিয়ারে প্রভাব ফেলবে এমন কোনো কারণ রয়েছে কি না, জানতে চাইলে সজল বলেন, ‘বিয়ে করলেই যে ক্যারিয়ারে প্রভাব পড়বে বিষয়টা তেমন না। কারণ, বিয়ের পরেও তো অনেকে ক্যারিয়ার শুরু করেন। আর বিয়ে নিয়ে এখন কথাই বলতে চাই না। এটা সময় হলেই জানিয়ে দেব।’
ফেব্রুয়ারি মাসে ‘জ্বীন ৩’-এর শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকবেন। জাজ মাল্টিমিডিয়ার এই সিনেমায় সজলের সহশিল্পী নুসরাত ফারিয়া। সিনেমাটি পরিচালনা করছেন কামরুজ্জামান রুমান। এটি আগামী ঈদে মুক্তি পাবে। পরে আরও একটি সিনেমায় নাম লিখিয়েছেন। ঈদের পরে শুটিং শুরু করবেন। ব্যস্ততা রয়েছে গত বছর চুক্তি হওয়া ‘জীবনের খেলা’ সিনেমা নিয়েও। সজল জানালেন, নতুন একটি ওয়েব সিরিজ ও সিনেমায় যুক্ত হচ্ছেন। তবে এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে।