দ্যা নিউ ভিশন

এপ্রিল ১০, ২০২৫ ১৯:০০

বাবা-ছেলের যুগলবন্দীতে শীত উবে যাওয়া রাত

রাহাত ফতেহ আলী খান নিজে সুর তুললেন, ছেলে শাজমান খান গাইতে শুরু করলেন

সন্ধ্যা তখন সাড়ে সাতটা। বড় পর্দায় ভেসে উঠল, স্টেডিয়ামে প্রবেশ করছেন রাহাত ফতেহ আলী খান। একটা শোরগোল পড়ে গেল। তারপর শুরু হলো অপেক্ষা। অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হতেই থাকল। এ অপেক্ষার কি শেষ হবে না! সানাইয়ের সুর রাত ৯টা ৫০ মিনিটে সেই অপেক্ষায় ছেদ টানল। টানা চার মিনিট সানাইয়ের সুরের মুগ্ধতা। এ যেন রাহাত ফতেহ আলী খানকে স্বাগত জানানোর আয়োজন!
অতঃপর রাহাত ফতেহ আলী খান এলেন। দর্শকদের উদ্দেশে বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম, বাংলাদেশ আমি তোমাকে ভালোবাসি।’ এরপর পরিচয় করিয়ে দিলেন প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে পারফর্ম করতে আসা ছেলে শাজমান খানকে। দর্শকদের জন্য একটা চমকই বলা যায়।

আর্মি স্টেডিয়াম তখন কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। হাজারো দর্শকের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে রাহাত ফতেহ আলী খান খুললেন জাদুর বাক্স। সুরের জাদু। ‘আনজানা আনজানি’ সিনেমার ‘তু না জানে’ দিয়ে শুরু। এরপর চলতেই থাকল। একে একে ‘দে দে প্যায়ার মাঙ্গা’, ‘ওরে পিয়া’, ‘জরুরি থা’, ‘মেরে রাশকে কামার’, ‘মিল যা কোয়ি’।
এরপর? রাহাত ফতেহ আলী খান নিজে সুর তুললেন, ছেলে শাজমান খান গাইতে শুরু করলেন। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে পারফর্ম করা। ‘ইয়াদ চাতা মে’, ‘পিয়া রে পিয়া রে’ গেয়ে বুঝিয়ে দিলেন, তিনিই হতে চলেছেন ফতেহ আলী পরিবারের যোগ্য উত্তরসূরি।

অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে যে শীত এসে নিজের উপস্থিতি জানান দিচ্ছিল, ততক্ষণে তা উবে গেছে। স্টেডিয়ামজুড়ে তখন শুধু সুরের উন্মাদনা। রাহাত ফতেহ আলী ‘আফরি আফরি’ গানে সুরের মোহ ছড়িয়ে দিলেন। তারপর শুরু হলো বাবা-ছেলের যুগলবন্দী। ‘তুমহে দিল্লাগি’ গানে বাবা-ছেলের এই যুগলবন্দী চাচা নুসরাত ফতেহ আলী খানের সঙ্গে ভাতিজা রাহাত ফতেহ আলীর যুগলবন্দীকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারে কাউকে কাউকে।

যুগলবন্দীর আবেশ পেরিয়ে আবার রাহাত ফতেহ আলী। একে একে ‘তেরে মাস্ত মাস্ত’, ‘দাগা পাসলে’। তারপর শেষ পাতে দই, ‘দমা দম মাস্ত কালান্দার’। চলল সুরের ঝংকার। সে পাগল করা উন্মাদনা। সানাইয়ের মাতাল করা সুরের আমন্ত্রণে মঞ্চে এসে টানা ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট ওস্তাদ রাহাত ফতেহ আলী আর ছেলে শাজমান খান মাতিয়ে দিয়ে গেলেন। উপহার দিয়ে গেলেন শীত উবে যাওয়া এক রাত।

গতকাল শনিবার ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে ‘ইকোস অব রেভল্যুশন’ কনসার্টে রাহাত ফতেহ আলী খান ছড়িয়ে গেলেন সেই সুরের আবেশ।

আয়োজকদের ঘোষণা অনুযায়ী বিকেল চারটায় সিলসিলার কাওয়ালি দিয়ে শুরু হয় কনসার্ট। এরপর একে র‌্যাপার হান্নান, র‌্যাপার সেজান, আফটারম্যাথ, চিরকুট পারফর্ম করে যায়। তারপর এক ঘণ্টার বেশি সময়ের একটা বিরতি দিয়ে মঞ্চে আসে ব্যান্ড আর্টসেল। তাদের পারফরম্যান্সের পর মঞ্চে আসেন রাহাত ফতেহ আলী খান।

‘ইকোস অব রেভল্যুশন’ কনসার্টটি যৌথভাবে আয়োজন করেছিল স্পিরিটস অব জুলাই প্ল্যাটফর্ম ও স্কাইট্র্যাকার লিমিটেড। আগেই ঘোষণা দেওয়া হয়, এ কনসার্ট থেকে সংগৃহীত অর্থ শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবার নিয়ে কাজ করা কল্যাণমূলক সংস্থা ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এ দেওয়া হবে। রাহাত ফতেহ আলী খান ও তাঁর দল গতকালের পরিবেশনার জন্য কোনো পারিশ্রমিক নেয়নি। কনসার্টের টিকিট বিক্রি থেকে আয়োজক সংস্থা কোনো অর্থ নেবে না বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছে।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ছাত্রদলের অনুষ্ঠানে শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি, ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার আশা

ছাত্রশিবির, ছাত্রদলসহ যাঁরা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছেন, তাঁরা ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী