শিল্পীদের অবহেলিত, একাকী ও অসহায় জীবন নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে অনেক আলোচনা চলছে। সর্বশেষ নব্বই দশকের জনপ্রিয় শিল্পী মনি কিশোরের মৃত্যুর ঘটনা এর একটি উদাহরণ। তার মৃত্যু হয়েছিল নিজ ঘরে, এবং এ খবর ৪-৫ দিন পরে প্রকাশ পায়। এটি শিল্পীদের একাকিত্ব ও অবহেলিত জীবনের চিত্র তুলে ধরে।
এই বিষয়টি চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ প্রতিযোগিতা থেকে উঠে আসা সংগীতশিল্পী মৌমিতা তাশরীন নদীকে গভীরভাবে ভাবাচ্ছে। সম্প্রতি তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন, যেখানে লিখেছেন, “আমি কখনোই আমাদের ইন্ডাস্ট্রির বিষয়ে কিছু লিখিনি, কারণ ‘ফেসবুক বিপ্লব’ আমার কাছে অপছন্দের। এটা কোনো ফলপ্রসূ ফল দেয় না। তবে এখন, কিছু কথা লেখা খুব প্রয়োজন মনে হচ্ছে। এটি কোনো অভিযোগ কিংবা অভিমান নয়। কথাগুলো পুরো এন্টারটেইনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের জন্য। তিনি যিনি সংগীতশিল্পী, অভিনয়শিল্পী, নির্মাতা, সাংবাদিক, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার বা মেকআপ আর্টিস্ট—সবার জন্য।”
নদী বলেন, “আমি ইন্ডাস্ট্রির একজন ক্ষুদ্র সদস্য হলেও নিজেকে এই বিশাল পরিবারের একজন ভাবি। তাই যখন বিষয়গুলো নির্মমতার দিকে এগিয়ে যায়, তখন পরিবারের সবাইকে নিয়ে চিন্তা আসাটা স্বাভাবিক। যে মানুষ গান শুনিয়ে বা অভিনয় করে লাখো মানুষের আনন্দের কারণ হন, সেই মানুষ কীভাবে একসময় ভীষণ একা হয়ে যায়? নব্বই দশকের একজন গায়ক একা ঘরে মরে পড়েছেন, আর কেউ খবরও পেল না—এই ঘটনা আমাকে খুব ভাবাচ্ছে। একে এতটা একা করে দেওয়া কীভাবে সম্ভব?”
এমন আরও অনেক শিল্পীর জীবন কাটছে একাকিত্বে, নিঃসঙ্গতায়। কেউ আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছেন, আবার অনেকে অবহেলিত হয়ে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন। নদী প্রশ্ন করেন, “এত বড় পরিবারের ইন্ডাস্ট্রি কেন কখনো একত্রিত হয় না?” তিনি বলেন, “হাসিমুখে গান গাওয়া বা দুর্দান্ত অভিনয় করা মানুষটি দিনের শেষে একা—এটা কি আমরা বোঝার চেষ্টা করি? আমরা ক’জন এই পরিবারের মানুষের সঙ্গে আন্তরিকভাবে সুন্দর আচরণ করি এবং তাদেরকে নিরাপদ বোধ করিয়ে সমস্যা শেয়ার করার জায়গা তৈরি করি?”