জুলাইয়ের ফ্যাসিস্টবিরোধী গণআন্দোলন ও গণহত্যা নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করছেন জনপ্রিয় নির্মাতা মাবরুর রশীদ বান্নাহ। তিনি ইতোমধ্যে প্রি-প্রোডাকশনের কাজ শুরু করেছেন। জুলাই আন্দোলনের সময় অফলাইন ও অনলাইনে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকা বান্নাহ এবার সেই বিষয় নিয়েই সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। মানবজমিনকে তিনি বলেন, “আপনারা জানেন, জুলাইয়ের গণআন্দোলন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে আমি শুরু থেকেই সোচ্চার। কিন্তু এটা প্রথম নয়; ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে আমার আন্দোলন দীর্ঘদিনের। ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আমি মনে করি, দেশ সঠিক পথে নেই। শাহবাগে আন্দোলনের সময় এবং মতিঝিলের শাপলা চত্বরে পুলিশি দমন ও হত্যাকাণ্ডের পরও আমি প্রতিবাদ করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “২০১৮ সালে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সময় আমাকে তুলে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়, কিন্তু আমি দমে যাইনি। নূরুল হকদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেও আমি ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। তবে ২৪ জুলাই আন্দোলনে নির্বিচারে যেভাবে মানুষ মারা হলো, তা একেবারেই নতুন একটি ঘটনা। সেই সময়ে আমি আন্দোলন চালিয়ে গেছি এবং হুমকি পেয়েছি। ২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, আহত ৪০ হাজারের বেশি।”
বান্নাহ জানান, “গণআন্দোলন, গণহত্যা ও স্বৈরাচারের পতন নিয়ে অনেক ঘটনা রয়েছে। এখন মনে হচ্ছে সঠিক সময় এসেছে। ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনকে আমি হৃদয়ে ধারণ করি। ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাকাণ্ড ও গণআন্দোলন বড় পর্দায় তুলে ধরব, সেজন্য সিনেমা বানাচ্ছি।”
অভিনয়শিল্পী নির্বাচন নিয়েও তিনি বলেন, “যারা জুলাইয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন, তাদের আমি বলব আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে। আমি চাই, যারা এই বিষয়টি অনুভব করেছেন, তাদের দিয়েই অভিনয় করাতে।” তিনি জানান, “জুলাইয়ে আহতদের মধ্যে অনেকেই এখানে অভিনয় করবেন।”
শুটিং কবে শুরু হবে? বান্নাহ বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব। ডিসেম্বরের মধ্যে শুটিং শুরু করতে চাই এবং নতুন বছরের শুরুতেই সিনেমাটি মুক্তি দিতে চাই। আমি সবার সহযোগিতা চাই—টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, যাদের আন্দোলনে অবদান ছিল।”
তিনি বলেন, “টাকার সহযোগিতা নয়, শুটিংয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারসহ সবার সাহায্য প্রয়োজন।” সিনেমা নিয়ে তার পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, “যেহেতু আমি শুরু করেছি, আমাকে থামানো যাবে না। বছরে সিনেমা ও ওয়েব কনটেন্ট মিলিয়ে অন্তত ছয়টি কাজ করতে চাই। নাটকের কাজ হয়তো এবার করা হবে না, যা বলতে কষ্ট হচ্ছে। কারণ নাটক দিয়েই আমি পরিচিত; প্রায় পাঁচশ’ নাটক তৈরি করেছি। এখানকার শিল্পী ও দর্শক আমাকে ভালোবাসেন। আশা করছি, আমার সিনেমার এই যাত্রায়ও তারা সঙ্গে থাকবেন।”