এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষার পরই বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া একটি সুবর্ণ সুযোগ। স্নাতক পর্যায় থেকেই বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করলে পরবর্তী ধাপগুলো আরও সহজ হয়ে যায়। এতে দেশে স্নাতক শেষ করে বিভিন্ন জটিলতা মোকাবিলা করতে হয় না। তাই উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যেতে চাইলে এই সময়ই সঠিক প্রস্তুতি নেওয়ার আদর্শ সময়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে এইচএসসির পরপরই বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন।
### ১. প্রবেশিকা পরীক্ষা
প্রতিটি দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তির সময় বিভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হয়। যেমন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য SAT বা ACT, যা শিক্ষার্থীর রিডিং, রাইটিং ও গাণিতিক দক্ষতা যাচাই করে। SAT-এ ১২০০-১৪০০ স্কোর এবং ACT-তে ২৫-৩০ স্কোর শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রয়োজন। যুক্তরাজ্যের জন্য A-Level পরীক্ষার ফলাফলও গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে ভর্তির জন্য যেমন মেডিকেলের ক্ষেত্রে BMAT বা UCAT-এর মতো পরীক্ষাও দিতে হয়।
### ২. ভাষা দক্ষতার পরীক্ষা
আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা প্রমাণ করতে হয়। এ জন্য IELTS, TOEFL, PTE বা Duolingo-এর মতো পরীক্ষাগুলো গ্রহণযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় ভর্তির জন্য IELTS স্কোর ৬ থেকে ৭.৫ পর্যন্ত এবং TOEFL-এর স্কোর ৮০-১০০-এর মধ্যে হওয়া প্রয়োজন। ইউরোপের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ছাড় দেয়।
### ৩. উচ্চশিক্ষা ও অভিবাসনের নথি তৈরি
বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথি থাকে, যেমন স্টেটমেন্ট অব পারপাস (SOP), লেটার অব রিকমেন্ডেশন (LOR), এবং সিভি। SOP-তে আপনার ক্যারিয়ার পরিকল্পনা এবং বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করার কারণ উল্লেখ করতে হবে। LOR সাধারণত আপনার শিক্ষকের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এ ছাড়া আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট, মার্কশিট, এবং অন্যান্য সাফল্যের দলিলগুলোও প্রস্তুত রাখতে হবে।
### ৪. স্বনির্ভরতার জন্য কিছু ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জন
বিদেশে নিজের খাবার রান্না করা, ড্রাইভিং শেখা, সাঁতার কাটা ও প্রাথমিক চিকিৎসার মতো ব্যবহারিক দক্ষতাগুলোও শেখা উচিত, যা আপনাকে ভিন্ন পরিবেশে স্বাবলম্বী হয়ে থাকতে সাহায্য করবে।
### ৫. স্কলারশিপে আবেদন
স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য দেশ অনুযায়ী বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে খোঁজ করতে পারেন। যেমন, ইউরোপের স্কলারশিপের জন্য DAAD, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য College Board-এর মতো প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। সঠিকভাবে স্কলারশিপে আবেদন করতে শিক্ষাগত যোগ্যতা, ভাষার দক্ষতা এবং অন্যান্য পরীক্ষার ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ।
এইচএসসির পর বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিলে ভর্তির প্রক্রিয়া সহজ হয়ে যায়, এবং স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে।