‘জিপিএইচ ইস্পাত-প্রথম আলো ইন-জিনিয়াস ২০২৪’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় পর্বের জন্য নির্বাচিত ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০টি দলের সদস্যদের নিয়ে দুই দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করা হয়। ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে ৪–৫ অক্টোবর এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে জিপিএইচ ইস্পাত ও প্রথম আলোর যৌথ উদ্যোগে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। এর একাডেমিক পার্টনার হিসেবে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি) কর্মশালাটির কার্যক্রম সমন্বয় করছে।
৪ অক্টোবর কর্মশালার প্রথম দিনে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের পুরকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নেহরীন মাজেদ শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানান এবং কর্মশালা উদ্বোধন করেন। প্রথম সেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাব্বির রহমান ও প্রভাষক মো. নাজমুল আলম প্রথম পর্বে প্রতিযোগীদের জমা দেওয়া প্রাথমিক রিপোর্টের ওপর আলোচনা করেন।
৫ অক্টোবর, দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম জিওটেকনিক্যাল প্রকৌশলের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, “বইয়ে সবকিছু পাওয়া যায় না; হাজার বছরের পুরনো স্থাপনা আজও টিকে আছে। তখনকার প্রকৌশলীরা তাদের উপলব্ধির ভিত্তিতে নির্মাণ করেছিলেন।” তিনি পিসা টাওয়ার, রোমান সভ্যতার স্থাপনা ও পিরামিডের উদাহরণ দেন।
কর্মশালার দ্বিতীয় দিন বিভিন্ন বিষয়ের ওপর সেশন পরিচালনা করেন আহছানউল্লাহ্ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির অধ্যাপক শারমিন রেজা চৌধুরী, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পুর ও পরিবেশ প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানভীর মুশতাফী এবং বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও প্রতিযোগিতার প্রধান বিচারক ড. খান মাহমুদ আমানত।
প্রধান বিচারক ড. খান মাহমুদ আমানত বলেন, “একজন দক্ষ পুরকৌশলী হতে হলে অনেক বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। নির্মাণের জন্য সঠিক উপকরণের সঠিক পরিমাণ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। স্ট্রাকচারাল ডিজাইন ড্রয়িংয়ের উপর নির্ভর করে নির্মাণ করা উচিত নয়, কারণ একটি ছোট ভুল পুরো নির্মাণে প্রভাব ফেলতে পারে।”
বিকেলে অনুষ্ঠিত সমাপনী ও সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. খান মাহমুদ আমানত, ইউএপির বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নেহরীন মাজেদ, সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাব্বির রহমান, প্রভাষক মো. নাজমুল আলম, বিচারক প্রকৌশলী মো. মাহবুব মোর্শেদ, জিপিএইচ ইস্পাতের হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেট কমিউনিকেশন ঈহিতা হাসান অহনা এবং প্রথম আলোর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন, যুব কার্যক্রম ও ইভেন্টের প্রধান সমন্বয়কারী মুনির হাসান। কর্মশালাটি সমন্বয় করেন আশরাফুল আল–শাকুর ও নূরুজ্জামান নাদিম।
কর্মশালায় অংশ নেওয়া বুয়েটের শিক্ষার্থী তাসনিম মাহিন বলেন, “এটি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি কর্মশালা। আমার একাডেমিক লাইফে এর আগে এমন কোনো কর্মশালা পাইনি।”
ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের শিক্ষার্থী আবদুল মুকিত বলেন, “দুই দিনব্যাপী কর্মশালায় আমরা অনেক নতুন কিছু শিখেছি, যা আমাদের কাজে লাগবে এবং আমরা এই প্রতিযোগিতায় ভালো করার জন্য চেষ্টা করব।”
আয়োজকেরা জানান, এ কার্যক্রম শুরু হয় ৩০ জানুয়ারি উদ্বোধনের মাধ্যমে। পরে ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকটিভেশন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য ১৮৮টি দল নিবন্ধন করেছে।