রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) ২০ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে কঙ্কাল ব্যবসা, হোস্টেলের সিট দখল, র্যাগিং, চাঁদাবাজি, অস্ত্র বহন, মাদক সেবন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নির্যাতন, মহিলা হোস্টেলে প্রবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে বক্তব্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের হুমকি ও নির্যাতনের।
শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে অবহেলা করার কারণে ১২ শিক্ষকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৬ জনকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হবে এবং অন্য ছয়জনের বদলির জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হবে। বুধবার রামেকের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রামেকের সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ২০ শিক্ষার্থীর সবাই ছাত্রলীগের সদস্য। এমবিবিএস ৬১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সজিব আকন্দকে তিরস্কার করা হয়েছে এবং অভিভাবকের উপস্থিতিতে তার মুচলেকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্য ১৯ জনকে হোস্টেল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং তাদের ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক বছরের জন্য শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন এমবিবিএস ৬১তম ব্যাচের বখতিয়ার রহমান, আরাফাত জুলফিকার ডেভিড, নকিবুল ইসলাম শাকিল, ফারিয়া রেজোয়ানা নিধি, নাফিউ ইসলাম সেতু, এবং ৬৩তম ব্যাচের শেখ সাকিব ও সোহম বিজয়।
৬ মাসের জন্য শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬১তম ব্যাচের রাশিদ মোবারক, ৬২তম ব্যাচের হাসিবুল হাসান শান্ত, আশিকুর রহমান, তরিকুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলাম, শোয়েব আকতার শোভন, জুহাইর আঞ্জুম অর্নব, মাহফুজুর রহমান, এবং ৬৩তম ব্যাচের কাজী হানিফ ও পূর্ণেন্দু বিশ্বাস রয়েছে। এছাড়া ৩১তম বিডিএস ব্যাচের নূর এ জান্নাত কিন্তু এবং ৩৩তম বিডিএস ব্যাচের ফারদিন মুনতাসিরও শাস্তি পেয়েছেন।
এই শিক্ষার্থীদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড জেনেও ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে ছয়জন শিক্ষককে বদলির জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যান্য ছয়জন শিক্ষককে বিভিন্ন মেয়াদে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রামেকের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খন্দকার ফয়সল আলম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ৩৪ জন শিক্ষক ও ৪৪ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।