সাম্প্রতিক বন্যায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১১টি জেলায় ২,৭৯৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো, আসবাবপত্র, বইপুস্তক ও অন্যান্য সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের পুনর্গঠনের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে, যা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জোগাড় করা হবে। আজ মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘সাম্প্রতিক বন্যায় প্রাথমিক শিক্ষা সেক্টরে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, নোয়াখালীতে ৭৬৩টি, ফেনীতে ৫৫০টি, কুমিল্লায় ৫২৩টি, লক্ষ্মীপুরে ৫০১টি, চাঁদপুরে ১৬৯টি, চট্টগ্রামে ১৬৪টি, মৌলভীবাজারে ৭৭টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২২টি, হবিগঞ্জে ২২টি এবং সিলেটে ৮টি বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খাগড়াছড়িতে কোনো বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। নোয়াখালী, কুমিল্লা, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলার ১৮টি উপজেলায় ৯৪৬টি আউট অব স্কুল চিলড্রেন শিক্ষা কার্যক্রমের শিখন কেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফেনী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও মৌলভীবাজারে ১ হাজার ৩২১টি বিদ্যালয়ের ১ লাখ ১৫ হাজার ৮২৩টি পাঠ্যপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২৮ হাজার ৭৩৬টি পাঠ্যপুস্তক পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। বাকি পাঠ্যপুস্তকগুলোর পুনর্বিন্যাস কাজ চলছে। ফেনীর বিভিন্ন উপজেলায় ৯৭ হাজার ৫৫৩টি পাঠ্যপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কিছু পাঠ্যপুস্তক পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ৮০টি বিদ্যালয়ের ২ হাজার ৩০০ পাঠ্যপুস্তক পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ৫৫৯টি বিদ্যালয়ের ১৩ হাজার ৮১০টি পাঠ্যপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পুনর্বিন্যাস কাজ চলমান রয়েছে। মৌলভীবাজারের রাজনগরে ১০০টি বিদ্যালয়ের ২ হাজার ১৬০টি পাঠ্যপুস্তক পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। তবে অন্যান্য জেলাগুলোর পাঠ্যপুস্তক ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এলজিইডি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, উপজেলা প্রকৌশলী, শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করবেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পোশাক ও ব্যাগের তালিকা ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। বিদ্যালয়গুলোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য ব্লিচিং পাউডার সংগ্রহসহ অন্যান্য জরুরি কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রম জরুরি ভিত্তিতে করতে হবে। সচিব ফরিদ আহাম্মদের সভাপতিত্বে সভায় বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ইউনিটের মহাপরিচালক নুরজাহান খাতুন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আব্দুস সামাদ, এলজিইডির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশীদ মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।