দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০১:৫৫

কৃষি গুচ্ছপদ্ধতিতে মান হারাচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)।

২০১৯ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার প্রবর্তন করেছিল, যাতে ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সুবিধা প্রদান করা উদ্দেশ্য ছিল। তবে পাঁচ বছরের মধ্যে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এই পদ্ধতির প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে এই বিষয়ে সমালোচনা বাড়ছে। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী উভয় পক্ষই আবার আলাদা ভর্তি পরীক্ষা চালুর পক্ষে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন পরিষদও গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষে মত দিয়েছে। ডিন পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. গোলাম রাব্বানী জানিয়েছেন, “আমরাও ঢাকার বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো আলাদা ভর্তি পরীক্ষা চালু করব। গুচ্ছপদ্ধতির কারণে নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিষয়ক পরিষদ দ্রুত এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।”

 

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, তিনি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার পক্ষে নন। তিনি বলেন, “গুচ্ছপদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ও স্বকীয়তা বজায় রাখা কঠিন, তাই আমাদের কৃষি গুচ্ছ থেকে বের হয়ে আসা উচিত। আমরা আমাদের মান অনুযায়ী মেধাবী শিক্ষার্থী বাছাই করতে চাই, যা গুচ্ছপদ্ধতিতে সম্ভব হচ্ছে না।”

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মো. পারভেজ আনোয়ার বলেন, “গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় আমাদের মান বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে, এতে প্রকৃত মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছে। আলাদা ভর্তি পরীক্ষা হলে মেধার সর্বোচ্চ মূল্যায়ন সম্ভব হবে।” মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক মো. গোলজার হোসেনও গুচ্ছ পদ্ধতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, “গুচ্ছের ফলে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বেশি ভর্তি হচ্ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।”

 

এছাড়া উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মো. বকুল আলী বলেন, “পূর্বের একক ভর্তি পরীক্ষায় কোনো অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়নি, কিন্তু গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে। গুচ্ছের মাধ্যমে বাকৃবির স্বকীয়তা নষ্ট হচ্ছে।”

 

ভেটেরিনারি অনুষদের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তারও গুচ্ছের কারণে সেশনজটের সৃষ্টি হওয়ার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “গুচ্ছ পরীক্ষার কারণে আমাদের সেশনজট হচ্ছে এবং ক্লাস শুরু হতে দেরি হচ্ছে। আগে পরীক্ষার সময় ছিল ধারাবাহিক, এখন তা অনিয়মিত হয়ে পড়েছে।”

 

শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন, আলাদা ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা এবং মেধার মূল্যায়ন পুনরুদ্ধার করা জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া জানান, “গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে আসার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।”

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট