বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের আয়োজনে সাত দিনব্যাপী যাত্রা উৎসবের শেষ দিন গতকাল বৃহস্পতিবার ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ যাত্রাপালার মাধ্যমে উৎসবের পর্দা নামেছে। ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ যাত্রাটি পরিবেশন করে যাত্রাবন্ধু অপেরা, যার লেখক শ্রী শচীননাথ সেন পালাকার এবং নির্দেশক আবুল হাশেম। এই পালাটিতে ২৩ জন শিল্পী অভিনয় করেছেন। এর কাহিনী ১৭৫৭ সালের পলাশী যুদ্ধের পর নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ও পতনের গল্প নিয়ে তৈরি, যা বর্তমানকালের জীবনকে ইতিহাসের মাধ্যমে প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করে।
পালাটির নির্দেশক আবুল হাশেম জানান, ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশী যুদ্ধ শুরু হলে নবাব সিরাজউদ্দৌলা একের পর এক সেনাপতির মৃত্যুসংবাদ পান এবং কিছু সেনাপতি যুদ্ধ বন্ধ করার অনুরোধ জানান। এরপর তিনি রায়দুর্লভের পরামর্শে যুদ্ধ বন্ধের ঘোষণা দিয়ে মুর্শিদাবাদ রওনা হন।
আবুল হাশেম আরো বলেন, নাটক এবং যাত্রাপালার মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো ‘ডায়ালগ উপস্থাপনে’র ভিন্নতা। যাত্রাপালায় ডায়ালগগুলো শক্তিশালীভাবে উপস্থাপিত হয়, যা নাটকে এমনভাবে হয় না। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনো যাত্রাপালার জনপ্রিয়তা রয়েছে, তবে যথেষ্ট সুযোগ পাওয়া যায় না। তবে বর্তমান সরকার এর প্রতি নজর দিয়েছে, যার ফলে যাত্রাপালার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হতে পারে।
উল্লেখ্য, ১ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবটি ‘যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবে তুমি বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়। উৎসবে দেশের বিভিন্ন জেলার সাতটি নিবন্ধিত দল সামাজিক ও ঐতিহাসিক সাতটি ভিন্ন পালা প্রদর্শন করে। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই প্রদর্শনী চলেছিল, যেখানে দর্শক ও সংস্কৃতিপ্রেমীরা ব্যাপক ভিড় জমিয়েছিলেন।
এ উৎসবে প্রদর্শিত অন্যান্য যাত্রাপালাগুলো হলো- সুরভী অপেরা পরিবেশিত ‘নিহত গোলাপ’, নিউ শামীম নাট্য সংস্থা পরিবেশিত ‘আনার কলি’, বঙ্গবাণী অপেরা পরিবেশিত ‘মেঘে ঢাকা তারা’, নর-নারায়ন অপেরা পরিবেশিত ‘লালন ফকির’, বন্ধু অপেরা পরিবেশিত ‘আপন দুলাল’ এবং শারমিন অপেরা পরিবেশিত ‘ফুলন দেবী’।