প্রায় সাত বছর আট মাস আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। তবে এই কলেজগুলোর উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে প্রত্যাশিত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে শুরু থেকেই এসব কলেজ নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন, যার মধ্যে পরীক্ষায় বিলম্ব এবং ফল প্রকাশে অস্বচ্ছতা অন্যতম। এই পরিস্থিতিতে কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা তাদের জন্য স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করছেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রেখে তাদের পরিচালনার জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিলেও শিক্ষার্থীরা তাতে সন্তুষ্ট নয়। তারা দাবি করছেন, এই ব্যবস্থা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে হওয়া উচিত এবং সনদে ‘অ্যাফিলিয়েটেড’ শব্দটি বাদ দিতে হবে, যাতে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় বহন করতে পারে।
অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের জন্য ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। তারা ঘোষণা করেছেন, এই সময়ের মধ্যে অধিভুক্তি বাতিল না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ভবনে তালা দেওয়া হবে।
সাত কলেজের বেশ কয়েকটিতে উচ্চমাধ্যমিকের ক্লাস চলছে, যা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করছে। শিক্ষকদের বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারূপে কাজ করতে হবে।
গত ২৪ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় সাত কলেজের শিক্ষা ও প্রশাসনিক সমস্যা নিরসনের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। শিক্ষার্থীরা দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন, যাতে উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব হয়।
ঢাকা কলেজের একজন শিক্ষক জানান, তাদের বিভাগে স্নাতক সম্মান প্রথম বর্ষে ২৪০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন, কিন্তু শিক্ষক সংখ্যা মাত্র ৬ জন। ফলে মানসম্মত শিক্ষা দেওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে।
সেই সঙ্গে, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা এবং ফল প্রকাশের দেরির কথা জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা দাবি করছেন, তাদের গবেষণার সুযোগ নেই এবং বিভিন্ন ধরনের শ্রেণীকক্ষে সংকট চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, রাজনৈতিক কারণে কিছু পরীক্ষা বিলম্বিত হয়েছে, তবে আগের ঘোষণার ভিত্তিতে শীঘ্রই নতুন সময়সূচি ঘোষণা করা হবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী আবদুর রহমান জানান, তাদের দাবি সাত কলেজের জন্য স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। শিক্ষার্থীরা চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখতে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন।
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত আলোচনা করে যৌক্তিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।