ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের জন্য নির্ধারিত কোটা, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য পোষ্য কোটা, এবং ক্রীড়াবিদদের জন্য খোলা কোটা বাতিলের উদ্দেশ্যে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) ই-মেইলের মাধ্যমে এই নোটিশ পাঠান। নোটিশটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি (প্রশাসন), প্রো-ভিসি (শিক্ষা) ও রেজিস্টারকে ই-মেইল করা হয়। ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষারের সঙ্গে নোটিশ দাতাদের মধ্যে আছেন ব্যারিস্টার মাহদী জামান (বনি), অ্যাডভোকেট বায়েজীদ হোসাইন, ও অ্যাডভোকেট শাহেদ সিদ্দিকী।
নোটিশে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনাদের সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা বহাল রেখে বাকি সব কোটা বাতিল করতে হবে। নোটিশ গ্রহীতারা যদি ব্যবস্থা না নেন, তবে সুপ্রিম কোর্টে রিটসহ আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া অবশ্যই মেধার ভিত্তিতে হতে হবে। অন্য কোনো মানদণ্ডে ভর্তি প্রক্রিয়া সাধারণত বৈষম্যমূলক, স্বেচ্ছাচারী এবং অযৌক্তিক, যা বৈধ রাষ্ট্রীয় উদ্দেশ্যের সাথে সম্পর্কিত নয়।
দেশের সর্বোচ্চ আদালত মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনাদের সন্তানদের জন্য সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে মাত্র ৫ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করেছে, যা ঢাবির ভর্তি প্রক্রিয়ায়ও প্রয়োগ করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের জন্য কোটা প্রদান করা সংবিধান ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী।
নোটিশে আরও বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ পোষ্য কোটা সংরক্ষণ করা বৈষম্যমূলক, স্বেচ্ছাচারী ও অযৌক্তিক। এ ছাড়া, ক্রীড়াবিদদের জন্য কোটা সংবিধানে সংজ্ঞায়িত পশ্চাদপদ বিভাগের অধীনে পড়ে না, তাই এটি সাংঘর্ষিক এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী।
ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের জন্য কোটা রাখা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী, এবং শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য পোষ্য কোটা সংরক্ষণও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ক্রীড়াবিদদের কোটা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে যে এতে স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির সুযোগ আছে। এজন্য এসব কোটা বাতিলের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নিলে হাইকোর্টে রিট দায়েরসহ অন্যান্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।