দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৪, ২০২৪ ২৩:৫৩

মাধ্যমিকে ফিরে আসছে বিভাগ বিভাজন, অর্ধবার্ষিকীর মূল্যায়ন হচ্ছে না।

শিক্ষার্থী

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, এ বছর নবম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন (বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ইত্যাদি) তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার নতুন শিক্ষাক্রমের এই পরিবর্তনসহ অনেক কিছু বাদ দিয়ে মাধ্যমিকে আবার বিভাজন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের অনেক বিষয় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী বছর নবম শ্রেণিতে উঠবে এমন শিক্ষার্থীরা পুরোনো শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শাখা ও গুচ্ছভিত্তিক পাঠ্যবই (২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত) পাবে। তারা আগের মতো নবম ও দশম শ্রেণি মিলিয়ে দুই শিক্ষাবর্ষে পাঠ্যসূচি শেষ করে ২০২৭ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেবে।

রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র দিয়ে নতুন শিক্ষাক্রম, পাঠ্যপুস্তক এবং অন্যান্য সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানিয়ে দিয়েছে।

পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে অনেক সমস্যার কারণে তা গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। এতে বলা হয়েছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২ বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির অভাব, পাঠ্য বিষয়বস্তু ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে অস্পষ্টতা, নেতিবাচক ধারণা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাব ও অন্যান্য সমস্যা থাকার কারণে এটি বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এসব কারণে নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের শুরুতে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছিল। এ বছর (২০২৪) আরও চারটি শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হয়: দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণি। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী বছর চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হওয়ার কথা ছিল। এরপর ২০২৬ সালে একাদশ এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হওয়ার কথা ছিল। নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়নসহ অনেক বিষয়ে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছিল।

এর মধ্যে একটি বড় পরিবর্তন ছিল মাধ্যমিকে বিভাগ বিভাজন তুলে দেওয়া। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, দশম শ্রেণি পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীকে ১০টি অভিন্ন বিষয় পড়তে হবে। এখন নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক এবং ব্যবসায় শিক্ষা নামে আলাদা বিভাগ চালু হচ্ছে। নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচি অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা হবে।

শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর নতুন শিক্ষাক্রমের পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করে সরকারের নতুন অবস্থান জানিয়েছে।

বর্তমানে নবম শ্রেণিতে পড়া শিক্ষার্থীরা আগামী জানুয়ারিতে দশম শ্রেণিতে উঠবে। তাদের জন্য ২০১২ সালের শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শাখা ভিত্তিক পাঠ্যবই সরবরাহ করা হবে। বিভাগভিত্তিক পাঠ্যবইয়ের একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি তৈরি করা হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা এক বছরে পাঠ্যসূচি শেষ করতে পারে। অর্থাৎ, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও বিভাগ বিভাজন অনুযায়ী এসএসসি পরীক্ষা দেবে।

এ বছরের বাকি সময় ও বার্ষিক পরীক্ষায় ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সংশোধিত মূল্যায়ন পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হবে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ছয়টি বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন কার্যক্রম আর অনুষ্ঠিত হবে না, এবং এই বছরের বাকি মূল্যায়ন ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে। সংশোধিত মূল্যায়ন পদ্ধতির রূপরেখা শিগগিরই বিদ্যালয়গুলিতে পাঠানো হবে।

অন্যদিকে, চলমান পাঠ্যপুস্তক এ বছর বহাল থাকবে, কিন্তু ২০২৫ সালে সংশোধিত পাঠ্যবই সরবরাহ করা হবে। প্রাথমিক শিক্ষায় প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের ধারাবাহিকতা রেখে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যবই সংশোধন করে মুদ্রণ করা হবে। মূল্যায়ন পদ্ধতি জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুযায়ী হবে, যার মানে পরীক্ষা প্রাধান্য পাবে।

পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শিক্ষাবিদ, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ, মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহযোগিতায় ২০২৫ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করা হবে এবং ২০২৬ সাল থেকে তা পূর্ণভাবে কার্যকর হবে।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ