**হার্ট অ্যাটাকের কারণে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ছাত্র মো. মোস্তফা তারেকের মৃত্যু**
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষা প্রশাসন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মো. মোস্তফা তারেক হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু ঘটে।মোস্তফা তারেকের বাড়ি নড়াইল জেলার আলাদাতপুর গ্রামে। তিনি পরিবারে বড় ছেলে, এবং তার একটি ছোট বোন সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন। তার মৃত্যুতে পরিবার ও বন্ধুদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে; পরিবারের একমাত্র অবলম্বনকে হারিয়ে সবাই দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
সহপাঠীরা জানান, ফুটবল খেলেনোর পর তিনি সিয়াম মালেক হলে গিয়ে বিশ্রাম নেন। খেলায় কিছুটা ক্লান্তি কাটাতে তিনি গোসল করতে যান। গোসল শেষে ফিরে এসে তার হালকা বুক ব্যথা শুরু হলে তিনি শুয়ে পড়েন। ধীরে ধীরে তার শরীর নিস্তেজ হতে থাকে এবং চেহারায় ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট হয়।
সহপাঠীরা আরও জানান, তার পূর্বে থাকা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বিবেচনায় তাকে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দেওয়া হয় এবং হাত-পায়ে মালিশ করে আরাম দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেটমোড়ে যাওয়ার পথে শিক্ষকদের একটি গাড়িতে করে তাকে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নোয়াখালী সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, “হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক করে তারেক সিয়াম মারা গেছে। তাকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে।”
শিক্ষা প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান জি এম রাকিবুল ইসলাম বলেন, “তিনি খুবই আন্তরিক ও ভদ্র ছেলে ছিলেন। বিভিন্ন সংগঠনের ভলান্টিয়ার হিসেবে তাকে সৃজনশীল কাজে কাজ করতে দেখেছি। তার অকাল মৃত্যুতে আমরা পুরো শিক্ষা প্রশাসন পরিবার শোকাহত। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান জানান, “তার অসুস্থতার খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলি। ডাক্তার তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করার পর আমরা তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহনের মাধ্যমে তার মরদেহ নড়াইলে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষক ও সহপাঠীদের সহযোগিতায় মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি আলাদাতপুরে পাঠানো হয়েছে এবং সেখানে তার দাফন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, “তারেক সিয়ামের অকাল মৃত্যুতে আমরা খুবই মর্মাহত। এই ঘটনার তদন্তে আমরা ইতিমধ্যে ৪ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। যদি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী পরিবহন পুল এবং মেডিক্যাল সেন্টারের সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তির গাফেলতির প্রমাণ মেলে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী আমরা সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমরা ২৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুলেন্স সেবা নিশ্চিত করার জন্য ভাড়া গাড়ির ব্যবস্থা করেছি এবং যত দ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নতুন অ্যাম্বুলেন্স ক্রয়ের চেষ্টা করব। পাশাপাশি, ওষুধ ক্রয়ের জন্য বাজেট দ্বিগুণ করার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।”
