রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ১২টার পর ঢাকা কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবস্থান নেন তারা। সড়ক অবরোধের ফলে আশপাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে এবং বর্তমানে সায়েন্সল্যাব মোড়ে সব ধরনের যান চলাচল নিষিদ্ধ রয়েছে।
এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন, যেমন ‘অধিভুক্তি নাকি মুক্তি, মুক্তি, মুক্তি’, ‘শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য, মানি না, মানব না’, ‘আর নয় দাসত্ব, হতে চাই স্বতন্ত্র’, এবং ‘ঢাবির জায়গায় ঢাবি থাক’। আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, তারা স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কোনো উদ্যোগ না নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, যা তারা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা দ্রুত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন।
সায়েন্সল্যাব ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠনের দাবিতে বেলা ১১টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা বেলা ১২টায় শুরু হয়। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সংকটের সমাধানের জন্য আন্দোলন করছেন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা কলেজে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা সাত কলেজের সমস্যার চিত্র তুলে ধরেন। তারা ২৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান এবং ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বরাবর স্মারকলিপি দেন। একই স্মারকলিপি কলেজগুলোর অধ্যক্ষদেরও দেয়া হয়।
এরপর ২২ অক্টোবর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজধানীর নীলক্ষেত ও সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেন। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এই অবরোধ চলেছিল। বিকেলে তারা ৩ দফা দাবি জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন এবং সেদিনের কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন। এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সাত কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সমস্যা নিরসনে ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে।
সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো:
১. অনতিবিলম্বে সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন করতে হবে।
২. এই কমিশন বিভিন্ন বিষয় যাচাই-বাছাই করে ৩০ দিনের মধ্যে একটি রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।
৩. স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কোনো সেশনজট তৈরি হতে পারবে না। যতদিন বিশ্ববিদ্যালয় গঠন না হবে, ততদিন সেশনজট যেন না হয়, সেভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হবে।