দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৪, ২০২৪ ২৩:৫৭

রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক নেই এমন ব্যবসায়ীরাও এখন আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন

মামলা। প্রতীকী ছবি

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মামলার ঘটনা ঘটছে। এসব মামলায় এমন কিছু ব্যবসায়ীকে আসামি করা হচ্ছে, যাদের কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই।

অভিযোগ রয়েছে যে, চাঁদা বা তৈরি পোশাক কারখানার ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ না পাওয়ার কারণে এবং অনৈতিক সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে অনেক ব্যবসায়ীকে আসামি করা হচ্ছে।

জানা গেছে, মামলায় কারা আসামি হবেন, তা অনেক ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট এলাকার বিএনপি বা দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। আবার কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি এই নেতাদের ব্যবহার করে নিজেদের প্রতিপক্ষকে মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।

নারায়ণগঞ্জের শিল্পাঞ্চলে এমন পাঁচটি মামলা পাওয়া গেছে, যেখানে অন্তত সাতজন ব্যবসায়ীকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলার তদন্তে উপরিউক্ত তথ্য ও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুটি হত্যা মামলা আড়াইহাজার থানায় হয়েছে, যেখানে ফকির গ্রুপের তিনজন শীর্ষ কর্মকর্তা—ফকির নিটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফকির আক্তারুজ্জামান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ফকির মাশরিকুজ্জামান নিয়াজ এবং ফকির ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফকির কামরুজ্জামান নাহিদ—কে আসামি করা হয়েছে। একই মামলায় ঢাকার বাইরের একজন পরিবহন ব্যবসায়ীকেও আসামি করা হয়। এই দুটি মামলার এজাহারে তাদের নামের ক্রমিকও একই।

ফকির ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফকির কামরুজ্জামান নাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ী। আমাদের পরিবার কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। আমাদের ব্যবসায়িক সুনাম ক্ষুণ্ন ও হয়রানি করার উদ্দেশ্যে আমাদেরকে হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। আরও মামলায় জড়ানোর হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’

মামলাগুলোর মধ্যে একটি হলো বিএনপির কর্মী সফিকুল ইসলাম হত্যা মামলা। ১৯ জুলাই তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় এবং ২১ আগস্ট তার স্ত্রী আড়াইহাজার থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আড়াইহাজার থানার আরেকটি মামলায় বাবুল মিয়াকে হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে। বিএনপির নেতা নুরুল আমিন মামলাটি করেন ২২ আগস্ট। বাবুল মিয়া আসলে মারা গেছেন ৩ জুন, কিন্তু মামলায় বলা হয়েছে যে তাকে হত্যা করা হয়েছে ৪ আগস্ট। এই অসামঞ্জস্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

অন্যান্য মামলাতেও বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আছেন আরএস নিটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোরশেদ সারোয়ার এবং ফতুল্লা থানার মামলায় এসবি স্টাইল লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান। এসব ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন যে, তারা রাজনীতিতে জড়িত না থাকলেও তাদেরকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে প্রতিশোধমূলক বা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হলে সেটাও অপরাধের শামিল। তিনি বলেন, এই মামলাগুলোর ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা উচিত, যাতে কেউ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হন।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ