দ্যা নিউ ভিশন

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ ০০:৩৫

মোহাম্মদপুরে ছিনতাই–ডাকাতি, আরও ৩৪ জন গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার। প্রতীকী ছবি

ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান। আজ সোমবার দুপুরে মোহাম্মদপুর থানায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানিয়েছেন। মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় চলমান অভিযান সম্পর্কে জানাতে এই প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।

তেজগাঁও বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মোহাম্মদপুরের বাসিন্দাদের মধ্যে শান্তি ও স্বস্তি ফেরাতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাব একসঙ্গে কাজ করছে। মোহাম্মদপুর এলাকার নিরাপত্তাব্যবস্থার পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল, চেকপোস্ট, ব্লক রেড ও বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। গতকাল রোববার শের শাহ সুরি সড়ক থেকে চাপাতিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের সামনে থেকে একটি ডাকাত দলের ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত জানিয়ে ডিসি মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান বলেন, অনেকের বিরুদ্ধে ছিনতাই, ডাকাতি ও চুরির মামলা আছে। ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনাগুলোর সঙ্গে তাঁদের যোগসাজশ পাওয়া যাচ্ছে। মোহাম্মদপুরে ছিনতাই ও ডাকাতির ছোট ছোট দল রয়েছে।

যাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাঁদের অনেকেই নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান বলেন, যখন অভিযান চালানো হয়, তখন চিহ্নিত ও অভ্যাসগত অপরাধীর বাইরেও কেউ কেউ আটক হন। এ ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাইয়ের পর নির্দোষ কাউকে পাওয়া গেলে তাঁকে মুচলেকা নিয়ে অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। চলমান অভিযানে এমন দুজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছিল। যাচাই-বাছাই করার পর তাঁদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

মোহাম্মদপুরে এলাকাভিত্তিক অপরাধী ও গ্যাংগুলোকে বিগত সরকারের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা প্রশ্রয় দিতেন বলে অভিযোগ ছিল। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এসব অপরাধীদের বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান বলেন, কোনো অপরাধীর সঙ্গে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পেলে নিরপেক্ষ জায়গা থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই বিবেচনা করেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চলতি মাসে মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে চারজন খুন হয়েছেন। সেখানে দুটি অপরাধী গ্রুপের আধিপত্য রয়েছে। এই আধিপত্য কেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তেজগাঁও বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান বলেন, জেনেভা ক্যাম্পে যে বিষয়টি সামনে এসেছে, সেটি হলো মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দুটি গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার। তাঁদের বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই করে গ্রেপ্তার অভিযান চলমান। অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই মুহূর্তে পরিসংখ্যান বলতে না পারলেও সংখ্যাটি অর্ধ শতের বেশি।

সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় ছিনতাই, ডাকাতি ও খুনখারাবি বেড়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে সন্ত্রাসমুক্ত মোহাম্মদপুরের দাবিতে এলাকাবাসী গত শনিবার বিকেলে মোহাম্মদপুর থানার সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। এমন অবস্থার জন্য তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়ী করেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান অগ্রগতির জন্য তাঁরা পুলিশকে তিন দিনের সময় বেঁধে দেন। এরপর শনিবার রাতেই যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ আরও ৩৪ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানাল পুলিশ।

Related News

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সর্বশেষ

ঝলমলে আইপিএল নিলামের অন্য রূপ: কালো তালিকা, রাতারাতি কোটিপতি আর ক্ষমতা প্রদর্শন

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি। ভারতীয় ক্রিকেট